চীনের অন্যতম সেরা শিক্ষক অধ্যাপক ফাং হুয়া ছানের গল্প
যখন শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন, তখন অধ্যাপক ফাং সবসময় মূল লক্ষ্যে অবিচল থাকেন। যখন বিভাগে শিক্ষকের অভাব দেখা দেয়, তখন তিনি নিজের ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্লাসও নিতেন। ১৯৯৬ সালে ৬৬ বছর বয়সের অধ্যাপক ফাং অবসর নেন। তবে তিনি আবার নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অবসর নেওয়ার পর, মেকানিক্যাল বিভাগের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর রচনা যুব শিক্ষকদের ভালো করে শিক্ষকতার কাজ করার জন্য সহায়তা দিয়েছে। ২০১১ সালে তিনি আবার বিশেষজ্ঞ দলের নেতার দায়িত্ব ছেড়ে দেন এবং উপকূলীয় তেল খাতের গবেষণায় আরও মনোযোগ দিতে শুরু করেন। যখন ৮০ বছর বয়সে তিনি ‘উপকূলীয় তেল প্রকৌশল’-এর ওপর দুটি বই প্রকাশ করেন এবং ৯০ বছর বয়সে ‘ফাং ওয়েন ছানের লেখা-উপকূলীয় তেল সরঞ্জামের অগ্রগতি’ শীর্ষক বইটি প্রকাশিত হয়।
যদিও তাঁর বয়স ৯৪ বছর হয়েছে, তবে তিনি যুব শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আগের মতোই আন্তরিক আছেন। ২০২২ সালে যখন বেইজিং পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়, তখন অধ্যাপক ফাং তাদেরকে আন্তরিকতাপূর্ণ চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি বলেন, “১৯৫২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেই আমি এবং ১৯৫৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নবগঠিত বেইজিং পেট্রোলিয়াম একাডেমিতে শিক্ষকতার কাজ শুরু করি। তখন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবেই কাজ করে এসেছি। নতুন শিক্ষার্থীদের সবাইকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানাই।”
নিজের পড়াশোনার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে অধ্যাপক ফান লিখেন, “১৯৪৮ সালের শরত্কালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার আগে, আমি থিয়ানচিনে বেইইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। তখন কুওমিনতাং পার্টি বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস করতে পারছিলেন না। গৃহযুদ্ধের কারণে শুরুর দিকে ভালো করে পড়াশোনা করতে পারিনি আমরা। ১৯৪৯ সালে যখন থিয়ানচিন শহর মুক্ত হয়, তখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের সহায়তায়, আবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শুরু করি। তাই আজকের শিক্ষার্থীরা একটি সুন্দর সময় উপভোগ করতে পারছে। এখন চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। চীনের সচ্ছল সমাজ গঠনে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং দেশকে শক্তিশালী করার পথে অগ্রগিত সাধিত হয়েছে।”