সন্তানের শিক্ষায় চীনা বাবা-মা কত টাকা খরচ করেন?
গত কয়েক বছরের জরিপ থেকে অধ্যাপক ওয়ে ই আরেকটি বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেয়েছেন, চীনা পিতামাতারা যত বেশি শিক্ষা গ্রহণের করেছেন, তারা ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষায় আরো বেশি ব্যয়ে আগ্রহী। অর্থাৎ চীনা পরিবারে মায়ের শিক্ষা যত বেশি, তাদের পরিবারে সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় তত বেশি।
আরেকটি প্রবণতা সারা বিশ্বে দেখা যায়, সেটা হল বিভিন্ন দেশের শিশু জন্মের হার ব্যাপক কমে গেছে। গত শতাব্দীর ৮০’র দশক থেকে চীন ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করে, তখন থেকে চীনের বিভিন্ন শহরের পরিবারে এক সন্তান বেশি দেখা যায়। ২০১৫ সালে চীনের জাতীয় জনস্বাস্থ্য পরিকল্পনা কমিটির ‘চীনা পরিবার উন্নয়ন প্রতিবেদন’ থেকে জানা গেছে, চীনে ৩ জন বা ৩ জনের চেয়ে কম সদস্যের পরিবারের সংখ্যা দেশের মোট সংখ্যার ৭০.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, তাদের মধ্যে দম্পতি ও এক সন্তানের পরিবারের সংখ্যা ৬৪.৩ শতাংশ।
জরিপ থেকে জানা গেছে, এক সন্তানের পরিবারের ক্ষেত্রে স্কুলের বাইরে অতিরিক্ত ক্লাস বা প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরিমাণ আরো বেশি, বিশেষ করে চারুকলা, নৃত্য বা অন্যান্য শখের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরিমাণ বেশি।
শিক্ষার ব্যয় দিকে বিবেচনা করলে উচ্চ আয়ের পরিবারের মেয়েরা সাধারণত পিয়ানো, সংগীত, চারুকলা ও ভাষার উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ সম্পর্কে অধ্যাপক ওয়ে বলেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বাবা মায়ের কথা বেশি শোনে।
নিম্ন আয় পরিবারে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ব্যয়ে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন তারা সন্তানদের পড়াশোনার স্কোরের ওপর আরো মনোযোগ দেন, যদি লেখাপড়ার ফলাফল ভালো হয়, তাহলে তাদের শিক্ষাবাবদ খরচ আরো বেশি করেন। যখন তাদের সন্তান উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তখন পরিবার পড়াশোনায় আরো বেশি প্রশিক্ষণ ব্যয় দিতে চায়।
অন্যদিকে, উচ্চ আয়ের পরিবারের পিতামাতা সন্তানদের পড়াশোনায় অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তিত নয়। তাই সন্তানের পড়াশোনার ফলাফল ভালো হচ্ছে কিনা তা এমন পরিবারের পিতামাতাদের জন্য বড় ব্যাপার নয়। তারা সন্তানদের বিভিন্ন দক্ষতার অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেন, তাই পিতামাতারা ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণ করাতে আগ্রহী।