সন্তানের শিক্ষায় চীনা বাবা-মা কত টাকা খরচ করেন?
চীনের লোকসংখ্যার পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত, চীনা নারীদের সন্তান জন্মগ্রহণের বয়স ২৬ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীত হয়েছে এবং পুরুষদের বাবা হাওয়ার বয়স ২৭ বছর থেকে ৩২ বছরে উন্নীত হয়েছে।
শহর ও জেলায় যুবক বাবা-মা তাদের সন্তানদের শিক্ষায় আরো বেশি টাকা দিতে চান। সন্তান জন্মগ্রহণের সময় যত দেরি, তাদের শিক্ষায় তত বেশি টাকা দিতে আগ্রহী বাবা-মা।
চীনের শহর ও জেলায় বাচ্চাদের জন্মগ্রহণের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার মূল কারণ দুটি, নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার বয়স পিছিয়ে যাওয়া এবং সন্তানদের শিক্ষাদানে পরিবারিক খরচের বেড়ে যাওয়া।
তবে চীনের গ্রামাঞ্চলে শহরের সাথে কিছু পার্থক্য দেখা দেয়। যেমন গ্রামাঞ্চলে যুব পিতামাতারা সন্তানদের স্কুলের বাইরে শিক্ষায় আর বেশি টাকা দেন না। এ সম্পর্কে অধ্যাপক ওয়ে মনে করেন, সেটি গ্রামাঞ্চল আর শহর এলাকার পিতামাতাদের চিন্তাভাবনার সাথে জড়িত।
তাছাড়া, চীনের বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ ক্লাস অংশ নেওয়ার পরিমাণ নিয়ে গবেষক দল জরিপ করেছে। ২০১৯ সালে স্কুলের বাইরে প্রশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের পরিমাণ ২৪ শতাংশ, ২০২২ সালে এ পরিমাণ ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে চীনে শিক্ষার জন্য ‘দ্বৈত হ্রাস নীতি’ চালু করার পর নিম্ন ও উচ্চ আয় পরিবারের জন্য শিক্ষার ব্যয় বেশি পার্থক্য দেখা যায় না, তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে শিক্ষার ব্যয় কিছুটা কমে গেছে।
অধ্যাপক ওয়ের জরিপ থেকে বোঝা যায়, চীনা পরিবারে সন্তানদের শিক্ষায় ব্যয় করা স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য ব্যাপার। অনেক পরিবার বিশেষ করে যাদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো, তারা ছেলেমেয়েদের শিক্ষায় আরো বেশি টাকা দিতে আগ্রহী। প্রিস্কুল পর্যায় থেকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা পর্যায়ে পর্যন্ত শহরের শিক্ষার ব্যয় গ্রামাঞ্চলের ৩ গুণে দাঁড়িয়েছে। উচ্চবিদ্যালয় পর্যায়ে শহর ও গ্রামাঞ্চলের এমন ব্যবধান কমে গেছে।
অধ্যাপক ওয়ে ই মনে করেন, শিক্ষার ব্যয় এবং অন্যান্য খাতের ব্যয়ের সবচেয়ে পার্থক্য হল, শিক্ষার খাতে ক্রেতারা হল পিতামাতা, তবে তাদের সন্তান সংশ্লিষ্ট পরিষেবা গ্রহণ করে। তাই পিতামাতা ও সন্তানদের একই ব্যাপারে অনুভূতি পুরোপুরি ভিন্ন। সেটি বাস্তব পণ্যদ্রব্য ক্রয়ের মতো নয়। স্কুলের বাইরে অতিরিক্ত ক্লাসে যোগ দেওয়া ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দক্ষতার উন্নয়নে কী কী ভুমিকা পালন করেছে, সেটিও বাচ্চাদের ব্যক্তিগত মেধা বা লেখাপড়ার অভ্যাসের সাথে জড়িত।