আরশান গ্রামাঞ্চলের শিল্পকলা ও পর্যটনশিল্প
পর্যটকদের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি শিল্পীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরা গ্রামবাসীদের সাথে যৌথভাবে উপযুক্ত জায়গা ঠিক করেন। তাঁরা বুঝতে পারেন যে, শিল্পকর্মের স্থান হিসেবে কৃষিক্ষেত ও বনভূমি এড়াতে হবে। কয়েকটি শিল্পীদল এবং স্থানীয় বন বিভাগ ও গ্রামবাসীদের সাহায্যে অবশেষে উপযুক্ত স্থান খুঁজে পাওয়া যায়।
ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলা একাডেমির ভাষ্কর্য বিভাগের অধ্যাপক তুং শু পিং উপযুক্ত স্থান খুঁজে পাওয়ার পর সেটা মার্ক করেন। এর পর তিনি ও তার শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়ে শিল্পকর্ম ডিজাইন করা শুরু করেন।
প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো এবং গ্রামবাসীদের সাথে যৌথভাবে ডিজাইন করা আরশান শিল্পকলা উত্সবের গুরুত্বপূর্ণ নীতি। এখানে সিখৌ গ্রামের বৈশিষ্ট্য ও জীবনযাপনের আমেজকে শিল্পকর্মের মাধ্যমে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে ডিজাইনার ওয়েন পো বলেন, “আমরা গ্রামবাসীদের কাছ থেকে স্থানীয় সংস্কৃতি ও রীতিনীতি সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং তা আমাদের শিল্পকর্মে প্রভাব ফেলেছে।” মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খোং ফান তি ৯ জন গ্রামবাসীকে নিয়ে পাহাড়ের উঁচু স্থানের বনাঞ্চলের তৃণভূমিতে বিভিন্ন রংয়ের কাঠ দিয়ে ‘সমুদ্রের আকৃতি’ ডিজাইন করেন। যখন বাতাস প্রবাহিত হয়, তখন গাছগুলোর পাতার ফাঁক দিয়ে আঁকাবাঁকা কাঠগুলোকে প্রাণবন্ত মনে হয়। এ সম্পর্কে শিক্ষার্থী খোং বলেন, “এই বহুবর্ণ সমুদ্রের ঢেউ যেন সিখৌ গ্রামবাসীদের সুন্দর জীবনের প্রতীক।”
বস্তুত এ শিল্পকর্মের অনুপ্রেরণা শিক্ষার্থী খোং পেয়েছেন সিখৌ গ্রাম পর্যবেক্ষণ করে। একবার তিনি খেয়াল করেন যে, গ্রামের প্রতিটি ঘরের সামনে ৪০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা কাঠের স্তুপ রয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা এসব কাঠ জ্বালিয়ে খাবার রান্না করেন। শিক্ষার্থী খোং ভাবেন, পাহাড়নির্ভর জীবন কাটায় গ্রামবাসীরা। তিনি এসব কাঠ দিয়ে একটি শিল্পকর্ম তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।