চীনের ডেলিভারিম্যানের শহরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের গল্প
জানা গেছে, চীনের ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাসের পড়াশোনা দেড় বছর থেকে ৩ বছরের মতো। কোর্সের মধ্যে ৮টি অংশ রয়েছে। ডেলিভারীম্যানরা ভালো স্কোর করে প্রথম পরীক্ষায় পাস করে থিসিস লিখে স্নাতকপত্র পেতে পারে।
ক্লাসের পড়াশোনার সময় যুবক লি হাও খেয়াল করেন যে, তাঁর অনেক সহকর্মী এখন তার সহপাঠীতে পরিণত হয়েছে। কুয়াংচৌ শহর তাদের জন্য কেবল চাকরির জায়গা নয়, বরং নিজেদের দক্ষতা অর্জনের ‘গ্যাস স্টেশনের’ মতো। বস্তুত আরো বেশি ডেলিভারীম্যানের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের চাহিদা সমাজের উন্নয়নের প্রবণতার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্কে কুয়াংতুং প্রদেশের বাণিজ্য পরিষদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন যে, ডেলিভারীম্যান বা টেক্সি ড্রাইভারের কাজ অনেক গ্রামাঞ্চলের যুব কর্মীদের জন্য বড় শহরে প্রথম চাকরি। কারণ, এ কাজের মাধ্যমে সহজে শহরের জীবনে প্রবেশ করা যায় এবং স্বল্পকালের মধ্যে উপার্জন্ও শুরু করা যায়। তবে শ্রমিক সংগঠনের সহায়তায় শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের আরো সুযোগ রয়েছে। উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা বাড়ে, যা সমাজের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকার রাখছে।
এ সম্পর্কে মেইথুয়ান কোম্পানির বিতরণ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার ওয়ে ওয়ে বলেন, কোম্পানির ডেলিভারীম্যানদের কর্মদক্ষতার উন্নয়নে শাখা বিতরণ স্টেশনের পরিচালক প্রশিক্ষণ, ডেলিভারীম্যানদের অনলাইন পড়াশোনা প্রশিক্ষণ আর ডেলিভারীম্যান উন্নয়নের প্রণোদনা পুরস্কারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।প্রণোদনা পুরস্কার হিসেবে বিভিন্ন ধরনের উত্হাসব্যঞ্জক ও সুবিধাজনক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে ডেলিভারিম্যানদের আর্থিক বোঝা কমিয়ে দিতে পারে।
এদিকে, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৭ লাখ ৬০ হাজারের বেশি, যা একটি নতুন রেকর্ড। এসব শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ও ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চলতি বছর মহামারীর কারণে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অনিশ্চয়তার উপাদান দেখা যাচ্ছে, কর্মসংস্থান বাজারও এর বাইরে নয়। বেইজিং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়ে আই লিং মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে তার চাকরি মোটামুটি নিশ্চত বলা চলে। একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে তিনি পণ্য-ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করবেন। এ সম্পর্কে মেয়ে ওয়ে সংবাদদাতাকে বলেন, ‘যদিও আমার চাকরি আমার মেজরের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়, তবে আমি নতুন চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট। এ পেশায় আমি ভাল করার ব্যাপারে আশাবাদী।’