চীনের ডেলিভারিম্যানের শহরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের গল্প
বন্ধুরা, চীনের সমাজ ও অর্থনীতি উন্নয়নের সাথে সাথে অনেক নতুন পেশার সৃষ্টি হয়েছে ও হচ্ছে; ডেলিভারিম্যান এদের মধ্যে একটি। অনলাইন ব্যবসার দ্রুত উন্নয়নের সাথে সাথে মাল পরিবহন ও ডেলিভারির চাহিদা অনেক বেড়েছে। অতীতে ডেলিভারিম্যানরা কেবল পণ্য বা চিঠি সরবরাহ করতেন। তবে বর্তমানে তাদের কাজে পরিধি বেড়েছে। তারা এখন নানান ধরনের কাজ করে থাকেন। বিশেষ করে মহামারী শুরুর পর ঘর থেকে অনলাইনে খাবারের অর্ডারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ডেলিভারিম্যানরা রেঁস্তোরা বা কফি শপ থেকে ক্রেতাদের অর্ডার অনুসারে ক্রেতাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়। তাই বলা যায়, ডেলিভারিম্যানের কাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয়। আজকের আসরে আমরা চীনের যুব ডেলিভারিম্যানের গল্প তুলে ধরবো।
২২ বছর বয়সের ডেলিভারীম্যান লি হাও বর্তমানে কুয়াংচৌ শহরের হাইজু এলাকায় কাজ করেন। বয়স কম হলেও, তিনি টানা চার বছর ধরে ডেলিভারীর কাজ করছেন। তাকে এখন সিনিয়র ডেলিভারীম্যান বলা যায়। তাঁর জন্মস্থান হুনান প্রদেশের ছেনচৌ শহরের একটি গ্রামে। স্বাধীন কর্মসময় আর ভালো মাসিক আয় বিবেচনা করে তিনি ডেলিভারীম্যানের কাজ বেছে নেন।
রাত ৮টায়, বিভিন্ন পণ্য গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার পরও, লি হাও’র কাজ শেষ হয় না। তখন তিনি কলেজের অনলাইন ক্লাসে ঢুকে পড়েন। যদিও কাজের সাথে সাথে লেখাপড়া করা অনেক ক্লান্তিকর কাজ, তবে দুই বছর অনলাইনে ক্লাস করে কলেজের স্নাতকপত্র পাওয়ার আশায়, লি মনোযোগ দিয়ে পরিশ্রমের সাথে পড়াশোনা করছেন।
আসলে লি’র মতো অনেক চীনা যুব শ্রমিক উচ্চশিক্ষা গ্রহণে চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে দিনের বেলায় বড় শহরে চাকরি করেন এবং রাতের অবসর সময়ে পড়াশোনা করেন। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে লি হাও বলেন, কুয়াংচৌ শহরের প্রধান এলাকার মানচিত্র এখন প্রায় মুখস্ত তার। কোনো ডেলিভারীর অর্ডার পেলে তিনি সহজে সবচেয়ে দ্রুত যাওয়ার পথ চিহ্নিত করে গন্তব্যে পৌঁছে যান। কলেজের কোর্স শেষ করার পর ডেলিভারী স্টেশনের পরিচালক পদে পদোন্নতি পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। কারণ, কেবল ডেলিভারীর কাজ তাঁর পেশার উন্নয়নের চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়।