চীনের ডেলিভারিম্যানের শহরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের গল্প
গত বছরের অক্টোবর মাসে চীনের প্রধান ডেলিভারী কোম্পানি ‘মেইথুয়ান’ ও চীনের ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতাচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে ডেলিভারীম্যানদের জন্য পেশাগত প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তারা সম্পূর্ণ বৃত্তি পেতেও পারেন। লি হাও এ কোর্সে অংশ নিচ্ছেন প্রথম পর্যায় থেকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কোর্সে অনার্স ডিগ্রীও যুক্ত করা হয়েছে।
বর্তমানে ডেলিভারীম্যান চীনের একটি বড় কর্মসংস্থান গ্রুপে পরিণত হয়েছে। কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের সাথে সাথে পেশাগত উন্নয়নের চাহিদাও বেড়েছে। মেইথুয়ান কোম্পানির জরিপ থেকে জানা গেছে, কোম্পানির ৫০.১৭ শতাংশ ডেলিভারীম্যান পেশাগত প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক। এ পরিপ্রেক্ষিতে কুয়াংচৌ শহরের শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে কয়েকটি ডেলিভারী কোম্পানি তাদের কর্মীদের জন্য শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মাধ্যমে ডেলিভারীম্যানদের জন্য উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বর্তমানে লি হাও প্রতিদিন রাতে কাজ শেষ করে বাসায় অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন। এক ঘন্টার ক্লাস তার জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারিনি, সময় নষ্ট করে খেলেছি।’ মাধ্যমিক স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেই তিনি ডেলিভারীম্যানের কাজ করতে শুরু করেন। তখন থেকে খেয়াল করেন যে, পড়াশোনা অতি গুরুত্বপূর্ণ। ডেলিভারীম্যানের কাজ দেখতে সহজ, তবে এ পেশায় ভালো করতে চাইলে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে, মালপরিবহনসহ বিভিন্ন পেশাগত জ্ঞানও অর্জন করতে হবে।
আরেক মধ্যবয়সী ডেলিভারীম্যান হং সিন লং বলেন, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্লাসের মধ্যে ইংরেজি তার সবচেয়ে প্রিয়। কারণ, কুয়াংচৌ শহরে অনেক বিদেশি বসবাস করেন। যখন খাবার বা পণ্যের অর্ডার পান, তখন বিস্তারিত ঠিকানা নিশ্চিত করতে অবশ্যই ক্রেতাদের সাথে তাকে কথাবার্তা বলতে হবে। যদি ইংরেজি বুঝতে না পারেন, তাহলে অনেক মুশকিল। যদিও বয়স ৪০ বছর, তবে হং সিন লং ভালো ইংরেজি শিখতে চান। ‘অনলাইন ক্লাস আমার জন্য খুবই ভালো’, তিনি বলেন।