আকাশ ছুঁতে চাই ৪৯-China Radio International
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আর এ শিশুদের সুরক্ষা , বেড়ে ওঠা ও অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্বনেতারা শিশু অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়ন করেন। এটি বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে অনুমোদিত মানবাধিকার চুক্তি।এই সনদের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী ইউনিসেফ বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে আসছে। এই দিনে ইউনিসেফ শিশুদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো সমাধানে সমর্থন আদায় করে, শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ায় এবং প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে। এইবার উদযাপিত হয়েছে ইউনিসেফের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
ইউনিসেফ বলছে, কোভিড-১৯-এর প্রভাব শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি ও সার্বিক কল্যাণের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০২০ সালের প্রথম দিকে এই মহামারি শুরুর পর থেকে স্কুল বন্ধের কারণে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশু এবং সমগ্র এশিয়া মহাদেশের প্রায় ৮০ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু বিপর্যয় এবং কোভিড-১৯-এর মতো জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সীদের মধ্যে একটি চলমান পুষ্টিসঙ্কট তৈরি করছে। ইউনিসেফের এক গবেষণায় জানা যায়, ২০২০ সালের মহামারির পর থেকে বাংলাদেশে কিশোরীদের বিয়ের হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এদিকে, ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ বলছে , করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্বের ৯১ শতাংশ শিশু ও তরুণ মানসিক চাপ ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
ইতিহাসের পাতা থেকে চীনা নারী: সাহসী সাংবাদিক হু চিবাং
এ পর্যায়ে আপনারা শুনবেন ইতিহাসের পাতায় বিখ্যাত চীনা নারীর গল্প।
চীনের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম হু চিবাং। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্যাশিস্ট নাৎসি জার্মানির হামলার বিরুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগণের মহান পিতৃভূমির যুদ্ধের বিবরণ সরাসরি রণাঙ্গন থেকে তুলে ধরেন। এই সাহসী নারী ছিলেন সেসময় রুশ রণাঙ্গনে চীনের একমাত্র ওয়ার করোসপন্ডেন্ট। রণক্ষেত্রে নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হু চিবাং যুদ্ধের প্রকৃত খবর চীনে পাঠাতেন।
হু চিবাংয়ের জন্ম ১৯১১ সালে। চীনা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি, জাপানি, রুশ, ল্যাটিন ও হাংগেরিয়ান ভাষায় পারদর্শী ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ সালে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে চীনা দূতাবাসের প্রেস অ্যাটাশিও ছিলেন। ১৯৪১ সালে নাৎসি জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে তিনি রণাঙ্গনে সাংবাদিকের দায়িত্ব পালন করেন। হুর পাঠানো প্রতিবেদনগুলোর মাধ্যমে চীনের জনগণ সোভিয়েত মানুষের বীরোচিত সংগ্রামের কথা সঠিকভাবে জানতে পারেন এবং জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পান। যুদ্ধর পর তিনি মস্কোতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সোভিয়েত পিতৃভূমির সংগ্রামের ৭০ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং যখন রাশিয়া সফর করেন তখন তিনি হু চিবাংয়ের সাহসী ভূমিকাকে স্মরণ করেন।
১৯৪৯ সালে চীনে ফিরে হু চিবাং সাংবাদিকের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির ফ্ল্যাগশিপ সংবাদপত্র পিপল’স ডেইলির সাংবাদিক ছিলেন।
হু চিবাং ১৯৯৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এই সাহসী, দেশপ্রেমিক ও প্রতিভাবান সাংবাদিককে চীনের জনগণ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
সুপ্রিয় শ্রোতা
এখন শুনবেন জনপ্রিয় চীনা শিল্পী হান হোংয়ের গান সেই নদী।