দেহঘড়ি পর্ব-৯০
#ভুলের_ভুবনে_বাস
ট্যারা চোখ ছোট সমস্যা নয়
বহুকাল ধরে বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠি, বিশেষ করে পশ্চাদপদ শ্রেণির মধ্যে একটি ধারণা যে, ট্যারা বা বাঁকা চোখ সৌভাগ্যের প্রতীক। সেকারণে সামান্য ট্যারা চোখকে তারা লক্ষ্মী ট্যারা বলে ডাকেন। আর অভিভাবকরা ট্যারা চোখের শিশুদের চিকিৎসা থেকে বিরত থাকেন, যাতে সৌভাগ্য হাতছাড়া হয়ে না যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি একটি ভুল ধারণা। আর এমন ভুল ধারণার বশবর্তীয় হওয়ায় কারণে যথাসময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করায় অনেক শিশুর একটি চোখ অন্ধ হয়ে যায়।
ট্যারা কী?
সাধারণত কোনও কিছুর দিকে তাকালে দুই চোখের মণি একই সঙ্গে একইভাবে নড়ে। তাই স্বাভাবিক চোখে মণি দুটো একই রেখায় থাকে। কিন্তু ট্যারা চোখে একসঙ্গে দুই চোখের মণি একইভাবে নড়াচড়া করে না। এ কারণে দৃষ্টি একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মেলে না। অন্য কেউ দেখলে মনে হবে দুই চোখের মণি দুই দিকে তাকিয়ে আছে। সাধারণত ট্যারা হয় ডানে বা বাঁয়ে। তবে ওপরে-নিচের দিকেও হতে পারে। কিছু ট্যারা আছে, যা সব সময় বোঝা যায় না, বিশেষ কোনো দিকে তাকালে বোঝা যায়।
ট্যারা কখন হয়?
নানা কারণে ট্যারা হতে পারে চোখ। জানিয়ে দিচ্ছি প্রধান কারণগুলো:
জন্মগত কারণ: অনেক শিশু জন্ম থেকেই ট্যারা চোখ নিয়ে জন্মায়।
মায়োপিয়া বা স্বল্পদৃষ্টি: যারা স্বল্পদৃষ্টির সমস্যায় আক্রান্ত, দূরের বস্তু দেখতে তাদের অসুবিধা হয়; চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এর ফলে ট্যারা সমস্যা দেখা দেয়।
হাইপারোপিয়া: এটি কাছের বস্তু দেখার অসুবিধাজনিত ত্রুটি। এর থেকেও অনেক সময় মানুষের চোখ ট্যারা হয়।
অস্টিগম্যাটিজম: অস্টিগম্যাটিজম হলে চোখের কর্নিয়া অমসৃণভাবে বাঁকানো থাকে এবং চোখ সমানভাবে রেটিনার ওপর ফোকাস ফেলতে পারে না। ফলে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা তৈরি হয়। এ থেকেও চোখ ট্যারা হতে পারে।