দেহঘড়ি পর্ব-৯০
অপরিপক্ক অবস্থায় জন্মগ্রহণ: গর্ভধারণের ৩১ সপ্তাহের আগে যেসব শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং যাদের বয়স জন্মের সময় ১ হাজার ২৫০ গ্রামের কম থাকে তাদের চোখ ট্যারা হওয়ার এমন কি অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
জেনেটিক কারণ: মা-বাবা ও তাদের মতো নিকটাত্মীয়ের যদি চোখের ট্যারা সমস্যা থাকে।
ভাইরাল ইনফেকশন: ছোটবেলায় হাম ও অন্য কয়েক ধরনের ভাইরাস সংক্রমণ থেকে ট্যারা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আঘাতজনিত কারণ: আঘাতে কখনও চোখের মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যান্য কারণ: এছাড়া ডাউন সিনড্রোমের মতো কিছু জেনেটিক সমস্যা, হাইড্রোসেফালাস বা মস্তিষ্কে পানি জমার মতো অসুখ, চোখের মাংসপেশির অস্বাভাবিক আচরণ বা সেরেব্রাল পালসি হলে চোখ ট্যারা হতে পারে।
ট্যারা চোখের ক্ষতি
ট্যারা চোখ স্বাভাবিক কাজকে ব্যাহত করে, সৌন্দর্যহানি ঘটায়, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে, চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে ফেলে। সময় মতো ট্যারা চোখের চিকিৎসা না করালে চোখ অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
প্রতিকার
ট্যারার আসল কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা জরুরি। যত কম বয়স থেকে চিকিৎসা শুরু করা যায়, সুস্থ্যতার সম্ভাবনা তত বেশি। জানিয়ে দিচ্ছি ট্যারা চোখের চিকিৎসা সম্পর্কে:
চশমা: ট্যারা চোখের চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় চশমা। দৃষ্টিজনিত যে সমস্যার জন্য চোখ ট্যারা হচ্ছে তা সংশোধনই এ চশমার কাজ। এ ধরনের চশমা চিকিৎসক দেখিয়ে নিতে হবে। সাধারণত যত বেশি সময় সম্ভব চশমা ব্যবহার করতে হয়।
চোখের ব্যয়াম: চোখের কিছু ব্যয়াম আছে, যেগুলো চারপাশে থাকা মাংসপেশির কার্যক্ষমতা ঠিক করতে সাহায্য করে। এতে ট্যারা চোখের সমস্যা কমে।
ইনজেকশন: ট্যারা চোখের সমস্যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বটুলিনাম ইনজেকশন দেওয়া হয়। যে মাংসপেশির কারণে ট্যারা সমস্যা হচ্ছে সেখানে ইনজেকশনটি দেওয়া হয়। ইনজেকশনটি কার্যকর থাকে তিন মাসের মতো। এ সময়ের পরও যদি চোখের ট্যারা না সারে, তখন অন্য চিকিৎসায় যেতে হয়। তবে মনে রাখা দরকার এ ইনজেকশনের বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।
অস্ত্রোপচার: চোখের নড়াচড়ার জন্য ছয়টি মাংসপেশি কাজ করে। এগুলো চোখের সঙ্গে সংযুক্ত। সাধারণত ট্যারা চোখের সমস্যা সমাধানে এর দুটি মাংসপেশিতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। একটি বা দুটি চোখেই অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। এ ধরনের অস্ত্রোপচারে হাসপাতালে থাকার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। - অভি/রহমান
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।