আমার ১৯১৯-China Radio International
১৯১৯ সালের জুন মাসের ৩ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে বেইজিং-এ প্রায় ১১৫০ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। এর প্রতিবাদে সাংহাই-য়ের ছাত্র সমাজের আহ্বানে ঐ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ধর্মঘট পালন করেন। তত্ক্ষণাত্ সাংহাইয়ের বৃহত্ শিল্প অর্থাত্ বস্ত্র শিল্প, তামাক শিল্প ও পরিবহন শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘটের ডাক দেন। দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন শহরে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা বিদ্রোহী ছাত্রদের সমর্থন একসাথে অনেকগুলি বিক্ষোভ মিছিল ও ধর্মঘটে শামিল হয়েছিলেন। ১২ জুন যে সমস্ত ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের গ্রেফতার করা হয়েছিলো তাদের সকলকে সরকার নিঃশর্তে মুক্তি দিতে রাজি হয়। যে তিনজন কুখ্যাত জাপানপন্থি মন্ত্রীকে আক্রমণের মধ্য দিয়ে ৪ঠা মে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো তাদের তিনজনকে মন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করতে সরকার সম্মত হয়। সর্বোপরি চীনা সরকারের প্রতিনিধিদল ভার্সাই সন্ধি-চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে।
৪ঠা মে আন্দোলন হয়েছিলো মূলত দুটি স্তরে। এই দুই স্তরের আন্দোলনের রাজনৈতিক চরিত্র পৃথক হওয়ার জন্য এদের ভৌগলিক কেন্দ্রবিন্দুও চিলো সম্পূর্ণ আলাদা। একটি স্তরে আন্দোলন প্রধানত সীমাবদ্ধ ছিলো বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে। এই স্তরের আন্দোলন হয়েছিলো চীনের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৌদ্ধিক কর্মকাণ্ডের পীঠস্থান রাজধানী বেইজিং-এ। আন্দোলনের অপর স্তরটির বৈশিষ্ট্য ছিলো স্বাধীনচেতা ছোট ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকশ্রেণীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। এই পর্যায়ের আন্দোলন গড়ে উঠেছিল অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ও শ্রমিকশ্রেণীর উত্থানের প্রাণকেন্দ্র সাংহাইতে। ছাত্র ও বুদ্ধিজীবিদের সাথে শ্রমিকশ্রেণীর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সেতু নির্মাণ করেছিলো ৪ঠা মে’র আন্দোলন। এ আন্দোলনের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হয় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি।