আমার ১৯১৯-China Radio International
তিনি বলেন, যদি আমি জাপানি প্রতিনিধির ঘড়ি চুরি করে থাকি, তাহলে আমি তাকে বলতে চাই, জাপান সারা বিশ্বের সামনে শানতোং প্রদেশটি চুরি করেছে, শানতোংবাসী কি এতে রাগ করবে না? সব চীনা মানুষ কি রাগ করবে না? কু উয়েই চুনের ভাষণ সম্মেলনে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তার ভাষণের মাধ্যমে সারা বিশ্ব বুঝতে পারে যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে চীনও বিশাল অবদান রেখেছিল।
১৯১৯ সালের ২৮ জুন প্যারিস পিস কনফারেন্সে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান যথাসময় অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি এতে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কু উয়েই চুন চুক্তি স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকেন। তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, চীনারা সবসময় আজকের এই দিনটির কথা মনে রাখবে। আফিম যুদ্ধের পর চীন সেই প্রথমবার অসমান চুক্তি স্বাক্ষরে অস্বীকৃতি জানায়। খবরটি সারা চীনে বিদ্যুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। চীনারা বুঝতে পারেন যে, অন্যদের ওপর নির্ভর করে চীনকে উদ্ধার করা অসম্ভব। শক্তিশালী হতে চাইলে নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমেই শক্তিশালী হতে হবে। এরপর গোটা চীনে মহান ‘৪ঠা মের আন্দোলন’ শুরু হয়। এই আন্দোলন সরাসরি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিসি’র জন্ম ও উন্নয়নের ওপর প্রভাব ফেলে। এই আন্দোলনকে চীনের পুরাতন গণতান্ত্রিক বিপ্লব এবং নতুন গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মিলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে একসঙ্গে ‘৪ঠা মে আন্দোলনের’ ওপর দৃষ্টি দেবো।
১৯১৯ সালে মে মাসের প্রথম দিকে চীনের বিভিন্ন বড় বড় শহরে টেলিগ্রাফ মারফত খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ভার্সাই সন্ধি-চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটেছে এবং সেখানে বিজয়ী দেশ হিসেবে চীনের কোনো দাবিদাওয়াই গৃহীত হয়নি। চীনের শাংতোং প্রদেশে জার্মানি যে অধিকারগুলি উপভোগ করতো, সেগুলি এখন থেকে জাপান উপভোগ করবে বলে স্থির হয়। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলি জাপানকে সন্তুষ্ট রাখতে চেয়েছিলো, কারণ তারা ভেবেছিলো যে, এশিয়াতে কমিউনিজমের উত্থানের পথ রুদ্ধ করার জন্য তাদের একটি মিত্রের প্রয়োজন হতে পারে।