আমার ১৯১৯-China Radio International
বড় একটি দেশের কূটনীতিক হিসেবে কী কী কাজ করা উচিত্?
কেউ যুদ্ধ করতে চাইলে দ্বিধা না করেই যুদ্ধ শুরু করা এবং কেউ আলোচনা করতে চাইলে আলোচনার দরজা সবসময়ই খোলা রাখা। কোনো একটি দেশের কূটনীতি- সে দেশের ইচ্ছাশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে এবং দেশের মর্যাদা রক্ষা করে। তবে কূটনীতিকদের ভাগ্যেও নানা উত্থান-পতন থাকে। যেমন- সিরিয়ার কূটনীতিক বাশার আল-জাফারি। ২০১৮ সালের বসন্তকালে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত এক অভিযোগ চাপিয়ে দিয়ে সিরিয়ার ওপর সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এতে জাফারি খুব রাগ করেন। তিনি জাতিসংঘ সম্মেলনে তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে অংশ নেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ভণ্ড ও প্রতারক বলে অভিযোগ করেন।
আসলে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ন্যায়বিচারকারী রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে থাকে। তবে, গোপনে মিথ্যাচার করা এবং যেখানে সেখানে যুদ্ধ শুরু করার জন্য দায়ী দেশটি। আশ্চর্যের বিষয় হলো- আন্তর্জাতিক মঞ্চে মার্কিন প্রতিনিধি কোনো প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে না-পারলে সরাসরি আসন ছেড়ে বেরিয়ে যান।
যেমনটি বলছিলাম, ওই ঘটনার পর মাত্র কয়েকদিন পর সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানো হয় এবং দেশটি ভয়াবহ যুদ্ধ ও দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সঙ্কটে পড়ে। সবাই বলেন, দুর্বল দেশের কোনো কূটনীতি নেই। শত বছর আগে চীনের একজন কূটনীতিকের ভাগ্য জাফারির মতো হয়েছিল। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে শত বছর আগের সেই চীনা কূটনীতিকের গল্প শুনবো। ‘আমার ১৯১৯’ নামক এই চলচ্চিত্রের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।
একশ বছর আগে চীনের প্রতিনিধিদল ‘প্যারিস পিস কনফারেন্স-১৯১৯’এ অংশগ্রহণ করেন। এই দলের একজন কূটনীতিক ছিলেন কু উয়েই চুন। চলচ্চিত্রে তাঁর সেই সময়ের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। চলুন, শুরু করা যাক।
১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর চার বছরব্যাপী প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। বিজয়ী দেশগুলো প্যারিসে এক সম্মেলনের আয়োজন করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে চীনের মোট ১ লাখ ৪০ হাজার সেনা অংশগ্রহণ করেছিল। তাঁরা যুদ্ধের সম্মুখ সারিতে লড়াই করেছেন, প্রাণ উত্সর্গ করেছেন এবং চীনের জন্য বিজয়ের মর্যাদা ছিনিয়ে এনেছেন। তাই প্যারিস পিস কনফারেন্সে অংশ নিতে চীনের তত্কালীন বেইইয়াং সরকার একটি প্রতিনিধিদল পাঠায়। কু উয়েই চুন এই দলেরই একজন সদস্য ছিলেন। তিনি সম্মেলনে চীনের জন্য আরো বেশি স্বার্থ আদায় করার স্বপ্ন দেখতেন।