আমার ১৯১৯-China Radio International
যুদ্ধে হেরে যাওয়া জার্মানি চীনের শানতোং প্রদেশ থেকে সরে যায়। হিসাব অনুযায়ী প্রদেশটির সার্বভৌমত্ব চীনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। তবে, পশ্চিমা দেশগুলো আলোচনার পর চীনের বক্তব্য না শুনে, তাদের ইচ্ছামতো শানতোং প্রদেশকে জাপানের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
চীনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে সম্মেলনের চেয়ারম্যান ও ফ্রান্সের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী দারুণ অহংকারপূর্ণ আচরণ করেন। তিনি কোনো কূটনৈতিক শিষ্টাচার প্রদর্শন করেন নি। এই সময় কু উয়েই চুন খুব বিনয়ের সাথে তাঁকে বাধা দিয়ে বলেন, আপনার বেড়াযুক্ত পোশাক খুলে স্বাভাবিক পোশাক পরা উচিত্। তিনি চেয়ারম্যানকে স্বাধীন ও যৌক্তিক মনোভাব দেখানোর প্রতি ইঙ্গিত দেন।
সাক্ষাত্কালে চেয়ারম্যান বলেন, এশিয়ার শান্তির জন্য চীনের শানতোং প্রদেশ ছেড়ে দেওয়া উচিত্। কু উয়েই চুন ভীষণ ক্ষুব্ধ ও হতাশ হন।
আসলে তত্কালীন বেইইয়াং সরকার ছিল তুলনামূলক দুর্বল। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে প্রতিনিধি দলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতিনিধিদের দলনেতা এতে ভীষণ ব্যথিত হন। সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কু উয়েই চুনকে দায়িত্ব দেন তিনি।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া জাপানি প্রতিনিধির পকেট থেকে একটি সোনা দিয়ে তৈরি ঘড়ি মাটিতে পড়ে যায়। কু উয়েই চুন ঘড়িটি দেখে মনে মনে খুব সাহসী হয়ে ওঠেন। চীনা কূটনীতির ইতিহাসে এই প্রথমবার পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী মনোভাব প্রদর্শন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ভাষণে কু উয়েই চুন বলেন, চীন শানতোং প্রদেশের দাবি ছাড়বে না। পশ্চিমারা যেমন জেরুজালেমকে ছাড়তে পারে না। জাপানি প্রতিনিধির ভিত্তিহীন ও হাস্যকর অভিযোগের জবাবে কু উয়েই চুন সেই সোনার ঘড়ি বের করেন। তিনি বলেন, জাপানের প্রতিনিধি এই ঘড়ি তাকে ঘুষ হিসেবে দিতে চান। জাপানের প্রতিনিধি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমার কাছ থেকে চীনা প্রতিনিধি ঘড়ি চুরি করেছে! সম্মেলন স্থলে হঠাত্ শোরগোল শুরু হয়ে যায়। তারা কু উয়েই চুনকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেন। তবে, সেই সময় কু উয়েই চুন একটি কথা দিয়ে গোটা পরিস্থিতি নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসেন।