ফারএওয়ে ব্রাইডস্-China Radio International
সিও ইউনের ট্রান্সন্যাশনাল বিবাহ আসলেই অধিকাংশ মানুষের কল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। উন্নত দেশ, ভালো পারিবারিক অবস্থা, স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক, নিজের পছন্দসই চাকরি। তবে সকল ট্রান্সন্যাশনাল বিবাহ সুখের হয় না।
সেরেনা নামের একজন হংকং মেয়ের নাইজেরিয়ার সিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা একে অপরকে ভালোবাসেন। তারা দু’জন হংকংয়ে বাস করতেন। তাদের একজন ছেলে এবং একজন মেয়ে আছে। জীবন সুষ্ঠু এবং স্থিতিশীল ছিলো। যেহেতু স্বামী কৃষ্ণাঙ্গ, হংকংয়ে মাঝেমাঝে অন্যদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টি সহ্য করতে হতো তাদের। তাই সেরেনা স্বামীর সঙ্গে হংকং থেকে নাইজেরিয়ায় চলে যান। ক্যামেরার সামনে সেরেনা জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেন। এখনকার জীবন সত্যিই কষ্টকর। অর্থনীতি অনুন্নত এবং অবকাঠামোও পশ্চাত্পদ। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার অবস্থাও উদ্বেগজনক।
চীনারা সেখানে স্থানীয় নানান অপরাধমূলক আচরণের শীর্ষ শিকার। সেখানে শুটিং করতে অনুষ্ঠানের কর্মীদের ২৪ ঘন্টা দেহরক্ষী নিয়োগ করতে হয়।
যাতায়াতের ক্ষেত্রে সীমাবন্ধতা আছে, নিরাপত্তার অভাব, হঠাত্ করে পানি ও বিদ্যুত্ বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রতি মুহূর্তে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হবার ভয়। এসব অসুবিধা সহ্য করতে পারেন সেরেনা। তার কাছে সবচেয়ে অসহ্য ব্যাপার হলো স্থানীয় পারিবারিক ব্যবস্থা চূড়ান্তভাবে পিতৃতান্ত্রিক। স্বাধীন একজন মহিলা হিসেবে হংকংয়ে সেরেনা বড় এক কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার ছিলেন। নাইজেরিয়ায় যাওয়ার পর তিনি গৃহিনী হিসেবে সংসারের কাজ নিয়ে বস্ত থাকেন। ওখানে নারীদের মর্যাদা নিম্ন পর্যায়ের। সব কঠিন হলেও স্বামীর মুখে ফুটে ওঠা মৃদুহাসি দেখে সেরেনা দিনের পর দিন সব সহ্য করে যান।
নাইজেরিয়ায় যাওয়ার পর সিন আরও আত্মবিশ্বাসী ও মর্যাদার অধিকারী হন এবং কাজেও অনেক অগ্রগতি অর্জন করেন। স্ত্রীর ত্যাগের জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। হংকংয়ে থাকার সময়ের তুলনায় নাইজেরিয়ায় তিনি স্ত্রীর মতামতকে বেশি গুরুত্ব দেন। বড় বা ছোট ব্যাপারে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে থাকেন।