আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই-China Radio International
মহামারিজনিত লকডাউন, ডিজিটালাইজেশন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব (ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন–ফোরআইআর)—এই সবকিছুই বৈশ্বিক শাসন ও পরিচালনব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দিচ্ছে। যেহেতু বিশ্বের প্রযুক্তি নেতারা একই সঙ্গে ভূরাজনৈতিক নেতাও হয়ে উঠতে যাচ্ছেন, সেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সংক্ষেপে এআই) মতো সর্বাধুনিক বা সর্বসাম্প্রতিক খাতে প্রাধান্য বিস্তারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে কোভিড–১৯ মহামারির পরে আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের দৌড়ে প্রাথমিক ধাপ হবে ফোরআইআর প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নের দিক থেকে এক নম্বরে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে চীন। এর বাইরে রাশিয়াসহ অন্য কিছু দেশও শক্তিশালী অবস্থানে আছে।
চীন এ খাতে (চিপ ও ইলেকট্রিক কার উৎপাদনসহ) ইতিমধ্যে ৩০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। দেশটি ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’ শীর্ষক জাতীয় উদ্ভাবন কৌশলনীতি গ্রহণ করেছে এবং এসব তৎপরতার মাধ্যমে তারা বাইডু, আলিবাবা ও টেনসেন্টের মতো বিশাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছে।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই উন্নয়নে চীন বিশাল ভূমিকা রাখলেও এ খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে তার আরও অনেক কিছু করার আছে। গবেষণা বলছে, তিনটি ক্ষেত্রে চীন এখনো পিছিয়ে আছে। সেগুলো হলো হার্ডওয়্যার, গবেষণা এবং বাণিজ্যিক খাত।
যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাইরে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোও ফোরআইআর উদ্ভাবনের দিকে ঝুঁকেছে। যেমন, যুক্তরাজ্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে পর্যাপ্ত তহবিল সরবরাহ করে এআই প্রস্তুতির দিক থেকে শীর্ষ চারটি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। একইভাবে এশিয়ার অনেক দেশ এআই এবং রোবট প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন কারখানায় রোবটের ব্যবহার অনেক গুণ বাড়ানো হয়েছে। প্রতি ১০ হাজার কর্মী গড়ে যে পরিমাণ পণ্য উৎপাদনে সক্ষম, ৭৭৪টি রোবট একই পরিমাণ পণ্য উৎপাদন করতে পারে। গাড়ি প্রস্তুত করার দিক থেকে আগে থেকেই জাপান শীর্ষস্থানে। তারা এখন এই শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এমন পর্যায়ে ইতিমধ্যেই নিয়ে এসেছে যে অদূর ভবিষ্যতে সেখানে গাড়ি উৎপাদনের কারখানায় মানুষের সরাসরি উপস্থিতি প্রয়োজন হবে না।