চীনের হাইড্রোঅ্যাকোস্টিক প্রকৌশলবিদ্যার জনক জনাব ইয়াং শি এয়ের গল্প
চীন বিশাল একটি দেশ। এ দেশের উপকূলরেখার মোট দৈর্ঘ্য ৩২ সহস্রাধিক কিলোমিটার। দেশে সমুদ্রের সাথে জড়িত হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশলের গবেষণাও অতি গুরুত্বপূর্ণ। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনের হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশল গবেষণার জনক ও অন্যতম একাডেমিশিয়ান ইয়াং শি এ’র গল্প তুলে ধরবো। তিনি আজীবন চীনের হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশলের গবেষণায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে গবেষকদের যৌথ প্রয়াসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি অর্জন করেছে দেশটি। চীনা বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো বড় ও গভীর সমুদ্রের শাব্দিক ব্যাপক জরিপ ও অনুসন্ধান কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে, চলতি বছরের ১৯ মার্চ ৯৩ বছর বয়সী অধ্যাপক ইয়াং শি এ হারবিন শহরে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু চীনের হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশলের গবেষণার জন্য বড় ক্ষতি। আজকে আমরা জনাব ইয়াং শি এ’র গবেষণা ও অবদান নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
১৯৩১ সালে ইয়াং শি এ জন্মগ্রহণ করেন। তখন চীনে যুদ্ধের কারণে সবার জীবন কষ্টের মধ্যে ছিল। ছোটবেলা থেকে তিনি ভালো করে পড়াশোনা করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর, তিনি ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগ থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আবেদন করেন এবং পরে চীনের প্রথম নৌবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করেন।
১৯৫২ সালে চীনা গণমুক্তি ফৌজের সামরিক প্রকৌশল একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিকাজ শুরু হয়। সেটি ছিল চীনের প্রথম বহুমুখী সামরিক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় হারবিন শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে এর নাম বদলে রাখা হয় হারবিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। কাজের কারণে শিক্ষক ইয়াং আবার হারবিনে যান।
১৯৫৭ সালে চীনের হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশলের গবেষণার শূন্যতা পূরণে সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করতে যান তিনি। তখন তিনি খেয়াল করেন যে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির পরীক্ষাগার বিদেশিদের জন্য কখনও খোলা থাকে না। তাই, বিদেশ থেকে কোনো উন্নত প্রযুক্তি কেনা বা তা নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব ছিল না। নিজের প্রচেষ্টায় শূন্য থেকে গবেষণার কাজ শুরু করতে হয় তাকে। তখন থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, চীনা ‘কান’ দিয়ে সমুদ্রের শব্দ শুনতে হবে, নিজের প্রচেষ্টায় হাইড্রোঅ্যাকোসটিক প্রকৌশলের গবেষণায় অগ্রগতি অর্জন করতে হবে।