চীনে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের জনপ্রিয়তা বাড়ছে
তা ছাড়া, প্রত্নতত্ত্ববিদ হতে চাইলে ব্যাপক ধৈর্যের পরিচয় দিতে হয়। শুরুর দিকে যে-কোনো সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া বেশ আনন্দদায়ক ব্যাপার। এর পর দেখা গেল পর পর কয়েক বছর কিছুই পাওয়া গেল না। সেই সময় হাল ছেড়ে দেওয়া চলবে না। মন খারাপ হলে তা হজম করতে হবে। প্রত্নতত্ত্ব গবেষণার মাধ্যমে ইতিহাসও সংশোধন করা যায়। আমাদের ইতিহাসের বইয়ে বলা হয়েছে, চীনা সভ্যতার ৫০০০ বছরেরও বেশি সময়ের ইতিহাস রয়েছে। তবে, পাশ্চাত্য বিশেষজ্ঞরা তা মানতেন না। একসময় চীনের চেচিয়াং প্রদেশের লিয়াংচু প্রাচীন জলসেচ প্রকল্পের ধ্বংসাবশেষ ২০১৯ সালে আবিষ্কৃত হয়। তখন থেকে আন্তর্জাতিক সমাজ চীনা সভ্যতার সুদীর্ঘকালীন ইতিহাসকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন।
চীনের সমাজ ও বিজ্ঞান একাডেমির গবেষণাগারের কর্মী পাই ছিয়ান এখন কানসু প্রদেশের তিংসি শহরের লিনথাও জেলায় সিওয়া ধ্বংসাবশেষে ফিল্ড জরিপের কাজ করছেন। নিজের কর্ম-অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পাই বলেন, “এক বছর আগে ডক্টরেট শিক্ষার্থী হিসেবে স্নাতক হয়েছি। তারপর সিওয়া ধ্বংসাবশেষে ৫ মিটার আয়তনের একটি বর্গক্ষেত্রে অনুসন্ধানকাজ শুরু করি। গত বছরের নভেম্বর মাসে এখানে গুরুত্বপূর্ণ মৃত্পাত্রের ভাটা খুঁজে পাওয়া যায়। বসন্তকাল থেকে এর আশেপাশের জিনিস খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে।”
সাধারণত, ফিল্ড জরিপের সময় প্রতি বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন ৮ ঘন্টার মতো অনুসন্ধানকাজ করতে হয়। বৃষ্টি হলে প্রত্নতত্ত্বকর্মীরা রুমে সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করেন এবং লিখিত তথ্য সংগ্রহের কাজ করেন।
আরেকজন যুবকর্মীর নাম লিউ ইয়ং। তিনিও চীনের সমাজ ও বিজ্ঞান একাডেমিতে কাজ করেন। তার প্রধান কাজ পরীক্ষাগারে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ থেকে সংগৃহীত তথ্য নিয়ে গবেষণা করা এবং তা ভালো করে সংরক্ষণ করা। চীনা প্রত্নতত্ত্ব কর্মীদের প্রচেষ্টায় এখন মানবজাতির উত্স, কৃষির উত্স ও সভ্যতার উত্স গবেষণায় অনেক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। যেমন, চেচিয়াং লিয়াংচু প্রাচীন নগরের ধ্বংসাবশেষের আবিষ্কার, চীনা সভ্যতার ৫০০০ বছরেরও বেশি ইতিহাসের প্রমাণ দিয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মের প্রত্নতত্ত্বকর্মীরা নিজ নিজ প্রচেষ্টায় চীনা সভ্যতার বিভিন্ন মূহুর্তের প্রাণবন্ত দৃশ্য তুলে ধরে চলেছেন।