শিশুদের লেখাপড়ায় মনোযোগের অভাবসংশ্লিষ্ট সমস্যা যেভাবে মোকাবিলা করতে হবে
কয়েক বছর আগে বেইজিং শিশু হাসপাতালে সর্বপ্রথম বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক চালু হয়। এখানে এডিএইচডি আক্রান্ত বাচ্চাদের সহায়তা দেওয়া ও চিকিত্সা করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শাংহাই, চিয়াংসু, চিয়াংসি আর হুপেইসহ বিভিন্ন এলাকার শিশু হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট মানসিক স্বাস্থ্য চিকিত্সা বিভাগ চালু হয়েছে। চীনা সমাজে বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় চেষ্টা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। প্রত্যেক অসুস্থ বাচ্চার জন্য নির্দিষ্ট চিকিত্সা প্রস্তাব ও পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে আরও বেশি চীনা পরিবার এ থেকে উপকৃত হতে পারে।
পড়াশোনায় মনোযোগের অভাব সম্পর্কে ডাক্তার ছুই বলেন, অনেক বাবা-মা এ রোগের কারণে উদ্বিগ্ন। এটি বিভিন্ন রোগের সংমিশ্রিত ফেনোমেনন ও ফলাফল; এর পিছনের কারণ জটিল।
কেউ কেউ বলেন, পড়াশোনায় মনোযোগের অভাবের মূল কারণ আইকিউ কম থাকা। ডাক্তার ছুই মনে করেন, এমন উপসংহার টানা ঠিক না। এটি বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগ ও অসুখের বহিঃপ্রকাশ। এতে আক্রান্ত হলে বই পড়া, অক্ষর লেখা, কথা বলা ও গণিতের হিসাবসহ বিভিন্ন কাজে অদক্ষতা দেখা যায়। এডিএইচডি, টিক ডিসঅর্ডার, অটিজম স্পেকট্রাম ব্যাধি, কিশোর বিষন্নতা, ইত্যাদি রোগের সংমিশ্রণে এই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
যখন বাচ্চাদের চিকিত্সা করেন, তখন ডাক্তার ছুই সবসময় জানতে চান যে, বাবা-মা কোন সমস্যা সমাধান করতে চান? অনেকে শেখার ফলাফলের ওপর গুরুত্ব দেন। এ সম্পর্কে ছুই বলেন, অনেক সময় বাচ্চারা এডিএইচডি-তে আক্রান্ত হওয়ার কারণে, শেখার ক্ষেত্রে অদক্ষতার পরিচয় দেয়। তবে, বাবা-মা অধিকাংশ সময় তাদের পড়াশোনার ফলাফলের ওপর মনোযোগ দেন। তারা চান বাচ্চার ফলাফল উন্নত হোক। আর অনেক বাবা-মা মানসিক সমস্যার প্রতি নজর দেন। তাঁরা বাচ্চাদের এমন সমস্যার সম্মুখীন দেখতে চান না।
বেইজিং শিশু হাসপাতালের মানসিক বিভাগে অনেকটি সাবমেজর রয়েছে। এসব সাবমেজরে নির্দিষ্টভাবে অসুস্থ বাচ্চাদের চিকিত্সা করা যায়। শিশু হাসপাতালে শেখার অদক্ষতা বিভাগ চালুর মাধ্যমে বাচ্চাদের জন্য আরও ভালো চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিভাগ স্থাপনের পর বিস্তারিত পরীক্ষা ও চেকআপ পদ্ধতি প্রণয়ন করা হয়। এভাবে আরও দ্রুত ও সঠিকভাবে অসুস্থ বাচ্চাদের চিহ্নিত করা সম্ভব এবং তাদের অসুখের অবস্থা বিবেচনা করে সঠিক চিকিত্সা বা পরামর্শ দেওয়া যায়।