শিশুদের লেখাপড়ায় মনোযোগের অভাবসংশ্লিষ্ট সমস্যা যেভাবে মোকাবিলা করতে হবে
এ ক্লিনিক চালুর পর কিছু বাচ্চা চিকিত্সা গ্রহণের পর বেশ উন্নতি করছে। আবার কোনো কোনো বাচ্চার কোনো উন্নতি হয়নি। এ সম্পর্কে ডাক্তার ছুই বলেন, এডিএইচডির সঠিক চিকিত্সা দিলে কিছু বাচ্চা দুই-তিন মাসের মধ্যে মানসিকভাবে অনেক উন্নতি করে। তখন তাদের বই পড়ার দক্ষতা বাড়ে। আবার কোনো কোনো বাচ্চার কোনো উন্নতি হয় না। সাধারণত, এডিএইচডি বা টিক ডিসঅর্ডারের কারণে শেখার অদক্ষতা হয়। আর সেক্ষেত্রে ওষুধ খেলে বা সংশ্লিষ্ট চিকিত্সা গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়। আর যদি অটিজম স্পেকট্রাম ব্যাধির কারণে এমন সমস্যা ঘটে, তাহলে সহজে চিকিত্সা করা সম্ভব হয় না।
অনেক পিতামাতা আত্মসমালোচনা করেন। তাঁরা বলেন, তাদের কোনো ভুল পদ্ধতির কারণে বা যত্নের অভাবে বাচ্চাদের এমন সমস্যা হচ্ছে কি না? অথবা, সঠিক প্রতিরোধক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বাচ্চাদের মানসিক অসুখ দেখা দিয়েছে কি না? এ সম্পর্কে ডাক্তার ছুই বলেন, বস্তুত শেখার অদক্ষতার মূল কারণ ঠিক জানা যায় না। তাই প্রতিরোধক ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। তিনি এডিএইচডি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, এটি শেখার অদক্ষতার প্রধান কারণ, তবে এটি মস্তিষ্কের বিকাশের সাথে বা মানসিক সমস্যা বা পিতামাতার যত্ন নেওয়ার পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত কোনো সমস্যা নয়।
ডাক্তার ছুই আরও বলেন, পিতামাতার আত্মসমালোচনা করার বা নিজেদের দোষ দেওয়া দরকার নেই। তবে, সঠিক পদ্ধতিতে সমস্যা মোকাবিলা করা জরুরি। কারণ, অনেক বাচ্চা ইতোমধ্যে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়েছে। তাদের বাবা-মা এ বাস্তবতা মেনে নিতে চান না। কিন্তু এমনটা ঠিক নয়। বাস্তবতা মেনে সঠিক চিকিত্সার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অদক্ষতার কারণে বাবা-মার কাছে বেশি বকা খেলে, শিশুর শেখার অদক্ষতা কমবে না বরং বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, অনেক বাবা-মা নিখুঁত বাচ্চা চান। তাদের কোনো ভুল সহ্য করতে পারেন না। যদি বাচ্চারা ভুল করে, তাহলে বাবা-মার মেজাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ ধরনের আচরণ বাচ্চার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাবা-মাদের উচিত মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা এবং সন্তানের সাথে যথাযথ ব্যবহার করা।
শেষ দিকে ডাক্তার ছুই পরামর্শ দিয়ে বলেন, আরামদায়ক ও সুখী পারিবারিক পরিবেশ গড়ে তোলা, বাচ্চাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক। শেখার অদক্ষতার সমস্যা চিকিত্সার মাধ্যমে দূর করতেও সময় লাগে, তা কম সময়ের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে না। যদি ডাক্তার চিকিত্সার ওষুধ বা প্রশিক্ষণ কোর্স দেন, তাহলে বাবা-মার উচিত নয় নিজেদের ইচ্ছামতো তা বন্ধ করে দেওয়া। ডাক্তারদের পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে।