চীনের অন্যরকম শিক্ষক চং কুয়াং ছুনের গল্প
চীনের বিভিন্ন এলাকার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের দৃষ্টিতে শিক্ষক চংয়ের ‘সহকারী পড়াশোনা ক্লাসের’ মাধ্যমে আরো বেশি শিক্ষার্থী স্বাধীন চিন্তাভাবনা ও নিজে নিজে পড়াশোনার দক্ষতা অর্জন করে। শিক্ষক চং সবসময় বলতেন, একটি আপেল ও আরেকটি আপেল যুক্ত হলে মাত্র ২টি আপেল হয়, তবে দু’জন শিক্ষার্থীর চিন্তাভাবনা যোগ হলে আরো বেশি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
এ সম্পর্কে রুইপেই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা গবেষণা বিভাগের পরিচালক শেন ছুন সিয়া বলেন, “আমাদের প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসে বাচ্চারা ব্যাপক কথা বলার সুযোগ পায়। তাদের আত্মপ্রকাশের গড় সময় ৬৭.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তাঁরা ক্লাসে বড় ভুমিকা রাখে।”
শিক্ষক চংকে স্মরণ করে চিয়াংসু প্রদেশের শিক্ষা ও বিজ্ঞান একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট চাং সিয়াও তুং বলেন, ‘শিক্ষক চংয়ের বিশেষ কারিশমা ছিল। তাঁর আন্তরিকতা ও সরলতা বেশ মুগ্ধকর।’
ছেলের স্মৃতিতে বাবা
শিক্ষক চং কুয়াং ছুনের ছেলে চং থিয়ান ছি একজন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষক। প্রতিদিন তাঁকে গবেষণার কাজে অনেক ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়। ছোটবেলায় বাবার সাথে তার স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, “যখন আমি দুষ্টুমি করতাম, আমার বাবা কখনও আমাকে মারতেন না। তিনি মনে করতেন, বাবা-মার কখনও বাচ্চাকে পিটুনি তেওয়া উচিত নয়। পিটুনি পিতামাতার পরিবারিক শিক্ষার ব্যর্থতার প্রতিফলন।” ছোটবেলার গল্প স্মরণ করে গবেষক চং থিয়ান ছি বলেন, “একবার আমার দুষ্টুমির কারণে শিক্ষক বাবাকে স্কুলে ডাকলেন। বাবা আমাকে পিটুনি দিলেন না। তবে, আমার সাথে শিক্ষকের কার্যালয়ের বাইরে ১০ মিনিট দাঁড়িয়েছিলেন। বাসায় ফিরে আমি ভয়ে ভয়ে ছিলাম। তবে, বাবা বললেন, তুমি শিক্ষকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে একটি চিঠি লিখে দাও। পরে তিনি বই পড়তে পড়তে আমার চিঠির অপেক্ষা করতে থাকেন। সেই স্মৃতি আমার মনে গভীর দাগ কেটেছে।”