চীনা নভোচারীরা যেভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন
আরেকটি ব্যাপার হল কঠোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ হলেও সফলভাবে মহাশূন্যে যাত্রা করা নিশ্চিত নয়, এর জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হয়। প্রতিবার মহাশূন্য যাত্রার চাহিদা এবং নভোচারীদের প্রশিক্ষণ অবস্থা বিবেচনা করে জটিল প্রক্রিয়ায় উপযোগী নভোচারীদের ঠিক করা সম্ভব। তবে প্রত্যেক যাত্রার সময়ের ফাঁকা সময় তুলনামূলকভাবে বেশি, তাই নভোচারীদের সাধারণত বহু বছর ধরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। তাদের দীর্ঘ দিনের অপেক্ষা মহাশূন্য কর্তব্যের প্রতি তাঁদের আবেগ ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। নভোচারী লিউ ওয়াং টানা ১৪ বছর, চাং সিয়াও কুয়াং টানা ১৫ বছর অপেক্ষা করেছেন এবং নভোচারী তেং ছিং মিং মোট ২৪ বছর ১০ মাস পর এ সুযোগ পেয়েছেন।
১৯৯৮ সালে যখন চীনা নভোচারীদের দল গঠিত হয়, তখন তেং ছিং মিং প্রথম দফার পদপ্রার্থী ছিলেন। তখন তিনি ভাবতে পারেননি যে, তাঁর মহাশূন্য স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তবে, একজন উপযোগী নভোচারীতে পরিণত হওয়া বেশ সহজ ব্যাপার নয়। টানা ২০ বছরের বহু প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন তিনি। প্রতিবার আবদেন করেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তিনি চেষ্টা পরিত্যাগ না করে, দৈনিক প্রশিক্ষণ ও লেখাপড়া চালিয়ে যান, নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতা উন্নত করার চেষ্টা করতে থাকে। অবশেষে, ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর মহাশূন্য যাত্রার সুযোগ পান তেং। তিনি শেনচৌ ১৫ নভোযানের একজন নভোচারী নির্বাচিত হন। চলতি বছর তাঁর বয়স ৫৬ বছর হয়েছে। সারা জীবনের প্রচেষ্টায় মহাশূন্যের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার।
স্বপ্ন প্রত্যেক নভোচারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে নভোচারী লিউ পো মিং বলেন, স্কুলে পরিশ্রমের সাথে পড়াশোনা কেবল জীবনযাপনের জন্য নয়, প্রত্যেকের মনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যও। নারী নভোচারী ওয়াং ইয়া পিং বলেন, স্বপ্ন যেন মহাশূন্যের তারা, দেখে মনে হবে বেশ দূরে, তবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে একদিন তাকে স্পর্শ করা সম্ভব।