চীনা নভোচারীরা যেভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের মহাকাশ গবেষণা ও অনুসন্ধানে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালে চীনা গণমুক্তি ফৌজের নভোচারী দল প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন ১৫০০ জনেরও বেশি শ্রেষ্ঠ বিমানচালকের মধ্য থেকে প্রথম দফায় ১৪ জনকে বেছে নেওয়া হয় নভোচারী হিসেবে। ৫ বছরের প্রশিক্ষণের পর, তাঁরা চীনা নভোচারী হিসেবে মহাকাশ গবেষণা ও অনুসন্ধানের কাজে যোগ দেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনা নভোচারীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
নভোচারী বেছে নেওয়ার সময় তাদের শারীরিক অবস্থার পর্যালোচনা ও পরীক্ষা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক কঠোর। শারীরিক পরীক্ষায় পাস হলে আরও অনেক জটিল ও পরিশ্রমের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে একজন উপযুক্ত নভোচারী হতে হয়। মানবজাতির মহাশূন্য যাত্রায় নভোচারীদের ভুমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য কেবল শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান শরীর আর স্থিতিশীল মানসিক যোগ্যতা দরকার তা নয়, বরং মহাশূন্যের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে দীর্ঘকাল ধরে কঠোর প্রশিক্ষণও গ্রহণ করতে হয়।
চীনা নভোচারীদের জন্য এ প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া বেশ জটিল। ২০০৩ সালে চীনের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে প্রথম নভোচারী ইয়াং লি ওয়েই সাফল্যের সঙ্গে মহাকাশে পৌঁছান। তখন থেকে চীনের মানববাহী নভোযানের উন্নয়নকাজ দ্রুত বাস্তবায়িত হয়। তারপর ফেই জুন লং, নিয়ে হাই শেং, লিউ ইয়াং আর ওয়াং ইয়া পিংসহ মোট ১৮ জন চীনা নভোচারী সফলভাবে মহাশূন্যে যাত্রা সম্পন্ন করেন। তাঁরা চীনাদের মহাশূন্য স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবদান রেখেছেন।
২০১০ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফার ৭ জন নভোচারী পদপ্রার্থী বেছে নেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৃতীয় দফার ১৮ জন নভোচারী নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে চতুর্থ দফার নভোচারীদের বাছাইয়ের কাজ চলছে।
প্রথম নভোচারী ইয়াং লি ওয়েই তাঁর প্রশিক্ষণ কোর্স স্মরণ করে বলেন যে, যদিও বিভিন্ন ধরনের জীবন রক্ষামূলক ব্যবস্থা রয়েছে, তবে মহাশূন্যের পরিবেশ উচ্চ বিকিরণ ও তাপমাত্রার ব্যাপক ব্যবধানের জায়গা, তাই নভোচারীরা বহু প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তার সাথে খাপ খাওয়াতে সক্ষম হয়ে ওঠেন। এর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক মহাশূন্যসম্পর্কিত জ্ঞানও অর্জন করতে হয়। মোট ১৩টি বিভাগে ৫০ ধরনেরও বেশি কোর্স রয়েছে। এটা যেন আরেকটি স্নাতক ডিগ্রির জন্য অধ্যয়ন। তার দৃষ্টিতে, নভোচারীদের প্রশিক্ষণ বেশ কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।