‘বসন্ত কুঁড়ি’ প্রকল্পের উপকৃত মেয়েদের গল্প
২০২২ সালের শেষ নাগাদ বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ২৭ হাজার মেয়েকে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, ১ লাখ ৩৩ হাজার মেয়েকে মানসিক পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হয়, এবং ১৮১১টি ছাত্রী স্কুল নির্মাণ করা হয়।
বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্প থেকে উপকৃত মেয়েরা স্নাতক হওয়ার পর বিভিন্ন চাকরিতে যোগ দেয়। তাঁরা নিজেদের কাজের মাধ্যমে চীনা সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখে এবং বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী হিসেবে নতুন প্রজন্মের মেয়েদের সহায়তা দেয়। তাদের মধ্যে অনেকে স্কুলের শিক্ষকে পরিণত হয়েছে। ২৬ বছর বয়সের নারী ওয়েন সিয়াও মেই বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্পের সুবিধাভোগী একজন ছাত্রী। তিনি মনে করেন, মানুষের মূল্য তার সামাজিক অবদানের সাথে সম্পর্কিত। বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্প থেকে উপকৃত হওয়ার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন এবং বড় হওয়ার পর সমাজের উন্নয়নে নিজের অবদান রাখতে চান।
ওয়েন সিয়াও মেই চীনের নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুইউয়ান শহরের সিজি জেলার হুয়াংছা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা দুর্বল দেখে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধনপত্র হাতে পেয়ে খুশী হবার পাশাপাশি তিনি এই ভেবে কষ্ট পান যে, পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে তার অন্য ভাই-বোনেরা উচ্চশিক্ষা থেকে হয়তো বঞ্চিত থেকে যাবে। পরিবারের বড় বাচ্চা হিসেবে তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ছোট বোন ও ভাইয়ের পড়াশোনায় সমর্থন দিতে চান। তবে, স্থানীয় নারী ফেডারেশন তার এ অবস্থা জেনে বসন্ত কুঁড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে তাকে সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেয়। ফলে মেয়ে ওয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। তার মা এ খবর শুনে অনেক খুশী হন।
অর্থ সহায়তা পেয়ে মেয়ে ওয়েন সিয়াও মেই নিংসিয়া নোর্মল একাডেমিতে পড়াশোনা শুরু করেন। স্নাতক হওয়ার পর ইনছুয়ান শহরের একটি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়ে শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি মনোযোগ দিয়ে বিভিন্ন ক্লাসের জন্য প্রস্তুতি নেন এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের কোর্স দেখে নিজের শিক্ষাদানের দক্ষতা ও মান উন্নত করতে চেষ্টা করেন। শিক্ষক ওয়েন মনে করেন, প্রত্যেক বাচ্চার অবস্থা আলাদা, তাই তাদের পড়াশোনার গতিও ভিন্ন। প্রত্যেক বাচ্চার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে উপযোগী পদ্ধতিতে ক্লাসে পড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।