পারিবারিক শিক্ষা: কেন একশ্রেণীর বাবা-মা বাচ্চার সঙ্গে হতাশাজনক আচরণ করেন?
মাঝেমাঝে বাবা-মায়ের হতাশাজনক কথা সম্পর্কে সহকারী অধ্যাপক ছেন একজন ছেলের অভিজ্ঞতার উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, একজন ছাত্র কারিগরি স্কুল থেকে কলেজে ভর্তির চেষ্টা করে। তবে তার বাবা-মা তার ভর্তি ও নিবন্ধন সম্পর্কে আস্থাবান নন। যখন সে অবশেষে কলেজে ভর্তি হতে পারে, তখন বাবা-মা আবার বলেন, লেখাপড়া হলেও কোনো লাভ নেই। যখন কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে সে নতুন চাকরি পায়, তখন বাবা-মা আবার বলেন, তোমার এ চাকরিতে বেতন এতো কম! উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে কী লাভ হলো? তাই এ ছেলে বাবা-মার সাথে জীবনযাপনের সময় বেশ হতাশায় ভোগে এবং তার অনুভূতি সবসময় নেতিবাচক। কারণ, বাবা-মায়ের কাছ থেকে কোনো প্রশংসা বা ইতিবাচক সে কখনও শোনেনি।
এ সম্পর্কে ছেন বলেন, কোনো কোনো বাবা-মা মনে করেন, কেবল বাচ্চাদের দমন করা বা সমালোচনা করার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা ও চরিত্র উন্নত করা সম্ভব। যদি বাচ্চাকে বেশি প্রশংসা করেন, তাহলে বাচ্চা অহংকারী হবে। এ অবস্থায় পিতামাতা ও বাচ্চার সম্পর্ক সহজে নষ্ট হবে। কোনো কোনো বাচ্চা বাবা-মায়ের সমালোচনার কারণে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, যা তাদের চরিত্র গঠনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
যদি বাবা-মা দীর্ঘকাল ধরে নিজের বাচ্চার সমালোচনা করেন, তাহলে বাচ্চাদের মানসিক অবস্থা অন্যদের চেয়ে খারাপ হবে। তারা অন্যদের প্রশংসা শুনলেও অবিশ্বাস করবে এবং আসল সুখ অনুভব করা তাদের জন্য খুবই কঠিন হবে। এ সম্পর্কে ছেন বলেন, বাবা-মা সবসময় বাচ্চার প্রশংসা করবেন, এটা কেউ বলছে না। বাচ্চার অগ্রহণযোগ্য অনুরোধ অবশ্যই রাখা যাবে না। তবে, যদি প্রত্যেক কাজে বাচ্চা সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়, সমালোচনা করা হয়, তাহলে সেটি বাচ্চার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একাডেমির মনোবিজ্ঞান গবেষণাগারের মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শদাতা লিউ ইয়ু সেন একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষিকা। তিনি বলেন, পিতামাতাদের উচিত মনের অনুভূতি গোপন রেখে বাচ্চাদের সাথে আলাপ করা। যেমন, মার কাছ থেকে বাচ্চা উপহার পেতে ভালোবাসে। তবে বর্তমানে পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতো ভালো নয়। বাচ্চার জীবনমান নিশ্চিত করতে মা বেশি টাকা দিয়ে উপহার কিনতে পারেন না। এটা সুন্দর করে বাচ্চাকে বুঝিয়ে বললে, সে বুঝবে। বাচ্চারা যদি পিতামাতাদের কাছ থেকে মর্যাদা পায় এবং বাবা-মাও বাচ্চার ভালোবাসা ও সম্মান পায়, তবে সম্পর্ক ঠিক থাকবে।