মোবাইলে আসক্ত ছেলের নতুন জীবন
স্কুলে পড়াশোনা শুরুর এক মাস পর সিয়াওতুং মাসিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষায় সে ভালো করে। সেটি ছিল তার জন্য বেশ উত্সাহব্যঞ্জক ব্যাপার। এ অভিজ্ঞতা স্মরণ করে সিয়াওতুং বলে, “আমার সহপাঠীরা এ পরীক্ষার ফলাফলকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারেনি। কারণ, আমি এতো কম সময়ের মধ্যে ক্লাসের শীর্ষস্থান অধিকার করবো, এটা ছিল তাদের জন্য অবিশ্বাস্য ব্যাপার।” শিক্ষকরা তাকে অনেক উত্সাহ দেন। তার আরো ভালো পরীক্ষার ফলাফল কামনা করেন। মাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় বর্ষে সিয়াওতুং মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে এবং বাবা-মা ও বড় ভাইয়ের দুঃখ দূর করে।
উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তির পর সিয়াওতুংয়ের পরীক্ষার ফলাফল আবার একটু খারাপ হয়। তবে এবার আর সে হতাশায় পড়াশোনা বন্ধ করেনি। কোভিড মহামারী চলাকালে শুধু অনলাইনে ক্লাস করতে হতো। সিয়াওতুং আবার নতুন স্মার্টফোন পায়। তবে, সে এবার শুধু মাঝেমাঝে গেমস খেলে। এবার আর তার কোনো আসক্তি নেই। তাঁর দৃষ্টিতে এখন মোবাইল ফোনে গেমস খেলা এতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়।
সঠিক পথে ফিরে আসার স্মৃতি স্মরণ করে সিয়াওতুং বলে, মাধ্যমিক স্কুলে একজন ইংরেজি শিক্ষক তাকে বেশি যত্ন নেন। তিনি সবসময় সিয়াওতুংয়ের প্রশংসা করেন। এভাবে তার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়।
বাবা-মাও তাদের কঠোর পারিবারিক শিক্ষা-পদ্ধতির ত্রুটি বুঝতে পারেন। পরিবারে ভালো পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন এবং ছোট ছেলেকে আরো বেশি সময় দিতে শুরু করেন; মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনতে চেষ্টা করেন। সিয়াওতুংয়ের কাওখাও পরীক্ষা অংশ নেওয়ার আগে বড় ভাই বার্ষিক ছুটি কাটিয়ে ছোট ভাইয়ের পাশে এসে দাঁড়ায়, তাকে সাহায্য করে।
অবশেষে সিয়াওতুং সাফল্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধনপত্র পায়। এ বিশেষ স্মৃতির স্মরণে তারা একটি ভিডিও বানায়। তাতে ছোট ভাইয়ের মোবাইল ফোনে আসক্তি এবং আবার নতুন জীবনে ফিরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হয়। সেটি ইন্টারনেটে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনেক নেটিজেনও সিয়াওতুংয়ের মতো স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল। তাদের অনেকে ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।