মোবাইলে আসক্ত ছেলের নতুন জীবন
আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে মোবাইল ফোন আর কম্পিউটার সাধারণ মানুষের জীবনে অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। অনেক পিতামাতা বাচ্চাদের হাতে নিজেদের মোবাইল ফোন তুলে দেন, কারণ এটা পেলে বাচ্চারা শান্ত থাকে। তবে অনেক বাচ্চা এ কারণে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার গেমসে আসক্ত হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত বাবা-মায়ের দুঃখের কারণ হয়।
সম্প্রতি চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি গল্প অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ইন্টারনেটে আসক্ত একটি ছেলে শুরুর দিকে স্কুলের লেখাপড়া ছেড়ে দিলেও, পরে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায় এবং নতুন ছাত্রজীবন শুরু করে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা ছেলে লিয়াও সিয়াও তুং এবং তাঁর বড় ভাইয়ের গল্প তুলে ধরবো।
ছেলে লিয়াও সিয়াও তুং এবং লিয়াও সিয়াও লং চীনের চিয়াংসি প্রদেশের একটি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সিয়াও লং এ পরিবারের বড় ভাই। সিয়াও তুংয়ের বয়স বড় ভাইয়ের চেয়ে ১০ বছর কম। তাদের বাবা-মা কুয়াংতুং প্রদেশের একটি আসবাবপত্র কারখানায় চাকরি করেন। যখন ছোট ভাই সিয়াও তুং জন্মগ্রহণ করে, তখন বড় ভাই সিয়াও লংয়ের বয়স ১০ বছর। বাবা-মা কাজের জন্য ব্যস্ত থাকতেন। তাই সিয়াও লংয়ের জীবন ছিল একাকী। ছোট ভাইয়ের জন্ম ছিল তাঁর জন্য আনন্দের ব্যাপার।
সিয়াও লং সবসময় তাঁর ছোট ভাইয়ের দেখাশোনা ও যত্ন করতো; তাকে নিয়ে একসাথে খেলা করতো। সিয়াও তুংয়ের মনে আছে, ছোটবেলায় বড় ভাই তাকে নিয়ে সাইকেলে গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। দু’ভাইয়ের সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। ধীরে ধীরে সিয়াও লং বড় হয়। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় বাবা-মা এবং ছোট ভাই একসাথে চিয়াংসি প্রদেশের ফুচৌ শহরের কুয়াংছাং জেলায় ফিরে যায়। কারণ, কয়েক বছর পর সিয়াও লং ‘কাওখাও’ পরীক্ষায় অংশ নেবে।
২০১৩ সালে ১৯ বছর বয়সের বড় ভাই সিয়াওলং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। স্বাভাবিকভাবেই তখন তাকে পরিবার ছেড়ে হোস্টেলে যেতে হয়। তখন থেকে ছোট ভাই সিয়াওতুংয়ের একাকী জীবন শুরু হয়। কারণ, বাবা-মা কাজে সবসময় ব্যস্ত। তাঁরা সিয়াওতুংকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন। সিয়াওতুংয়ের যে-কোনো চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। তবে, মাঝেমাঝে সিয়াওতুংকে মারধোরও করতেন বাবা-মা।