চীনের সেরা শিক্ষক ধান বিশেষজ্ঞ চাং হং ছেং এবং সিপিইউ মাতা হুয়াং লিং ই
চাংয়ের সহকর্মীদের দৃষ্টিতে ধানের প্রতি আপন বাচ্চার চেয়েও বেশি যত্নশীল চাং হং ছেং। তাঁর ছেলেমেয়েকে তিনি বেশি সময় দিতে পারেন না। অধ্যাপক চাং, বহু বছরের গবেষণার পর, নির্দিষ্ট হিসাবনিকাশ করে জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে ধানের উত্পাদন সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৫০০ কেজি হওয়া সম্ভব। তবে, পরীক্ষামূলক ধানক্ষেতে টানা তিন বছরেও এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। বিস্তারিত গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর চাং মনে করেন, সুপার উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ নির্ভূলভাবে বড় হয়েছে। এখন বিভিন্ন ধাপের প্রযুক্তির চমত্কার ব্যবহার করতে হবে।
বহু বছর ধরে অধ্যাপক চাংয়ের নেতৃত্বে তাঁর ধান গবেষক দল সেরা ধানের চারা বেছে নেওয়া এবং সুনির্দিষ্টভাবে পানি ও সার দিয়ে ধানের বড় হওয়ার প্রক্রিয়া চমত্কারভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ফলে, টানা ৫ বছর সিংহুয়া এলাকার প্রতি হেক্টর ধানক্ষেতে ফলনের পরিমাণ ১৩ হাজার ৫০০ কেজি ছাড়িয়ে যায়। সুপার উচ্চ ফলনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়। চাং মনে করেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাটি ও ধানের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা শেখা। তার মানে, মনোযোগ ও পরিশ্রমের সাথে কাজ করা প্রয়োজন।
শিক্ষার্থী ওয়াং রুই বলেন, শিক্ষক চাং সবসময় বলেন, প্রতিদিন পরিশ্রমের সাথে কাজ করে গেলে বড় পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। আর যদি প্রতিদিন অলস্যের সাথে কাজ করা হয়, তাহলে ধীরে ধীরে অন্যদের সাথে ব্যবধানও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
চাং সবসময় বলেন, মানুষকে পরিশ্রমের সাথে কাজ করতে হবে, প্রতিদিন অন্যদের চেয়ে একটু বেশি সময় দিয়ে কাজ করতে হবে। এভাবে দীর্ঘকাল শেষে সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে।
ভালো করে সময় নিয়ন্ত্রণ করার কারণে টানা ৪৮ বছর ধরে অধ্যাপক চাং কৃষি গবেষণার কাজের সবচেয়ে উন্নত স্তরে এসে দাঁড়াতে পেরেছেন। চীনের ১০টির বেশি প্রদেশ সফর করতে হয়েছে তাকে কৃষিকাজের জন্য। গত কয়েক দশক ধরে তিনি গাড়িতে একটি কুইল্ট বহন করে আসছেন। যাত্রার পথে বিশ্রামের সময় এই কুইল্ট তাঁর কাজে লাগে। গন্তব্যে পৌঁছে তিনি আর বিশ্রাম নেন না, বরং কাজে লেগে যান।