চীনের সেরা শিক্ষক ধান বিশেষজ্ঞ চাং হং ছেং এবং সিপিইউ মাতা হুয়াং লিং ই
১৯৭২ সালে চিয়াংসু কৃষি একাডেমিতে ভর্তি হন শিক্ষার্থী চাং হং ছেং। তখন থেকে তাঁর জীবনে খাদ্যশস্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। স্নাতক হওয়ার পর তিনি শিক্ষক হিসেবে স্কুলে চাকরি পান। তাঁর প্রথম গবেষণার বিষয় ছিল কৃষির সহজিকরণ। যদিও নাম শুনলে সহজ মনে হয়, তবে এর পেছনে জটিল গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া রয়েছে। কৃষিক্ষেতে ধানের চারা রোপন বেশ ক্লান্তিকর ব্যাপার। তা কি অন্য পদ্ধতিতে লাগানো যায়? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন তিনি। গত শতাব্দীর আশির দশকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দিন-রাত বিভিন্ন সৌরপদে কৃত্রিমভাবে ধানের চারা রোপনের পরীক্ষা চালান। তবে, ঝড়বৃষ্টির কারণে তাদের পরীক্ষার ফলাফল সবই নষ্ট হয়ে যায়। এ সম্পর্কে অধ্যাপক চাং বলেন, যদিও বৃষ্টির কারণে অনেক ধানের চারা নষ্ট হয়েছে, তবে তাদের মধ্যে কিছু কিছু চারা পাশের মাটিতে বড় হয়েছে এবং অবশেষে এগুলোতে ধানও উত্পন্ন হয়েছে।
পরে তিনি একটি নতুন পরীক্ষা চালান। ধানের চারার মূলের অংশ মাটিতে লেপ্টে গোল করে দূর থেকে তা ধানের ক্ষেত লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা। এতে ধানের চারাগুলো যেন ফুলের মতো ধানক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকরা এ পদ্ধতিতে জমির আইলে দাঁড়িয়ে সংশ্লিষ্ট রোপন-কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। এভাবে শিক্ষক চাংয়ের প্রথম গবেষণা সফল হয়। চীনের কোটি কোটি কৃষকের ধানচাষের কষ্ট কেটে যায়। নতুন এই ‘চারা নিক্ষেপ প্রযুক্তি’ সারা চীনে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত চীনের বিভিন্ন প্রদেশের ধানক্ষেতে এ প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ হয়েছে।
ধানচাষসংশ্লিষ্ট আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল: কিভাবে নির্দিষ্ট মাটিতে উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ করা যায়? ২০০৪ সালে শিক্ষক চাং এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা শুরু করেন। নতুন প্রজাতির ধান কেবল উচ্চ ফলনশীল নয়, বরং সুপার উচ্চ ফলনশীল প্রমাণিত হয়। অধ্যাপক চাং সে কথা স্মরণ করে বলেন, “ভোর ৪টায় গাড়িতে উঠে ধানক্ষেতে পৌঁছে নাস্তা করতে হয়। ধান বড় হওয়ার নিয়মিত প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করা হয়ে ওঠে মূল কাজ। প্রতিদিন দুই-তিন বার টিশার্ট পরিবর্তন করতে হতো। এভাবে বহুদিন ধরে ধানক্ষেতে সময় কাটাতে হয়েছে।”