চীনের শিক্ষক দিবস ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের গল্প
ধীরে ধীরে আহুই প্রদেশের লিউআন শহরের সুপরিচিত শিক্ষক হয়েছেন তুং। তিনি নিয়মিত টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, ম্যাগাজিনে প্রবন্ধ লেখান। ইতোমধ্যেই শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত প্রায় সবধরনের পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। বড় শহরের স্কুল থেকেও বিশেষ অফার আসে। সেই সময় কোন সিদ্ধান্ত নেবেন, তা ঠিক করা তাঁর জন্য কঠিন ব্যাপার ছিল। গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা এ তথ্য জেনে অনেকবার কেঁদেকেটে তাকে চলে যেতে বারণ করেছে; তাঁরা শিক্ষক তুংয়ের সাহচর্যে থাকতে চায়।
শেষ পর্যন্ত শিক্ষক তুং আর গ্রাম থেকে শহরে ফিরে যাননি। তাঁর দৃষ্টিতে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদের দায়িত্ব আরও ভারী, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে আরো বেশি প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ছোটবেলায় শিক্ষক তুং গ্রামাঞ্চলে বড় হয়েছেন। তিনি এসব এলাকার বাচ্চাদের ভালো পড়াশোনায় নিজের অবদান রাখতে চান।
আত্মউন্নয়নের প্রচেষ্টা থেকে তিনি কখনও বিরত হননি। বই পড়া, লেখা, অনুশীলনসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে শিক্ষকতার দক্ষতা উন্নত করেন তুং। তিনি মনে করেন, বই পড়া হচ্ছে ইনপুট এবং লেখালেখি হচ্ছে আউটপুট। প্রতিমাসে তিনি বাচ্চাদের নিয়ে বই পড়েন; একই বই পড়ার মাধ্যমে পড়ার ধারণা ও অনুভূতি বিনিময় করেন তাঁরা।
২০১৬ সালে শিক্ষক তুং লিউআন শহরে একটি বই পড়ার কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন করেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষকদের সাথে অনলাইন ও অফলাইনে বই পড়ার অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা বিনিময় করেন। এ কেন্দ্রের আওতায় আসে আশেপাশের ১০টিরও বেশি জেলার ৬০টিরও বেশি উপজেলার ৮০০০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক। বাচ্চাদের পিতামাতারা মনে করেন, শিক্ষক তুংয়ের উদ্যোগ ছাত্রছাত্রীদের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর হয়েছে।
২০১৯ সালে তাঁর উদ্যোগে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকরা একটি কর্মদল গঠন করে। প্রতি সপ্তাহে একটি প্রবন্ধ লেখা এবং প্রতি মাসে একটি বই পড়া তাদের কাজ। এভাবে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা একসাথে বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে পারে।