চীনের শিক্ষক দিবস ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের গল্প
গত ১৮ বছরে শিক্ষক তুং গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের পড়াশোনার বিশেষ পদ্ধতি খুঁজে পান। তিনি খেয়াল করেন, কবিতা আবেগের সমৃদ্ধ শিল্প, সুন্দর প্রকৃতিতে বড় হওয়া বাচ্চাদের জন্য রোম্যান্টিক চিন্তাধারার মতো। তিনি নিয়মিত বাচ্চাদের নিয়ে নদী ও পাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেন। বাচ্চারা নদী, ধানক্ষেত ও পাহাড়ের দৃশ্য থেকে কবিতার অনুপ্রেরণা খুঁজতে চেষ্টা করে।
২০১৩ সালে তিনি শিক্ষার ক্ষেত্রে সংস্কার চালু করেন। হুওছিউ জেলার গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের কবিতার ক্লাস নেন তিনি। তিনি সবসময় বাচ্চাদের সাথে প্রকৃতি ও কৃষিকাজসম্পর্কিত কবিতা রচনা করেন; বাচ্চারা কবিতা ও উপন্যাস লেখার মাধ্যমে নিজেদের অনুভূতি সবার সাথে শেয়ার করতে পারে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি নতুন একটি উদ্যোগ নেন। গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের অনেকে পিতামাতার সাথে থাকে না। তাদের বাবা-মা বড় শহরে চাকরি করেন। তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি ‘দূরের কবিতা’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেন। প্রতি সপ্তাহে বাচ্চারা বাবা-মাকে চিঠি লেখে। তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সেইসব চিঠিতে। ৬০০টিরও বেশি শিশুতোষ কবিতা এবং ৫০০টিরও বেশি বই, গ্রামাঞ্চলের কবিতা কার্যক্রমে বিশেষ ভুমিকা রাখে। সেই থেকে বাচ্চাদের মধ্যে কবিতার প্রতি আকর্ষণ অনেক বেড়েছে।
তাদের লেখা কবিতা আনহুই প্রদেশের প্রাথমিক স্কুলের প্রতিযোগিতায় অনেক পুরস্কারও লাভ করেছে। বাচ্চাদের কেউ কেউ প্রাদেশিক পর্যায়ের সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছে। এ সম্পর্কে শিক্ষক তুং বলেন, “অতীতে আমরা কখনও এমন সাফল্যের কথা ভাবতে পারিনি। কবিতার মাধ্যমে বাচ্চাদের হৃদয় উষ্ণ করা যায় এবং তাঁরা পিতামাতার সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখতে পারে। এটি হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা আর পারিবারিক শিক্ষার সংমিশ্রণ।” শিক্ষক তুং মনে করেন, বড় শহরের শ্রেষ্ঠ স্কুলে না গিয়ে তাঁর গ্রামাঞ্চলে থেকে যাওয়ার তাত্পর্য রয়েছে। তিনি আন্তরিকতার সাথে গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের শিক্ষা দিতে চান; গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখতে চান।