চীনের উচ্চশিক্ষায় তথাকথিত অপরিচিত বিষয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে
শিক্ষার্থী লি ইয়ো শি’র অনার্সের মেজর চীনা ভাষা সাহিত্য। একবার প্রাচীন চীনা ভাষার ক্লাসে চীনা অক্ষর সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে তাঁর মনে ব্যাপক কৌতুহল সৃষ্টি হয়। পরে তিনি মনোযোগ দিয়ে সংশ্লিষ্ট গবেষণাকাজ শুরু করেন। মাস্টার্স চলাকালে তিনি মেজর হিসেবে বেছে নেন ‘ওরাকল’ বিষয়। তবে, পড়াশোনা শুরুর পর তিনি জানতে পারেন যে, এ মেজর বেশ কঠিন ও অপরিচিত। তিনি সংবাদদাতাকে বলেন, শুরুর দিকে কোনো ওরাকল অক্ষর সম্পর্কে তিনি জানতেন না। তাই, অর্ধেক দিনে কেবল একটি পৃষ্ঠার অক্ষর পড়তে পারতেন। আবার বিভিন্ন ওরাকল একসাথে মিলিয়ে যে অর্থ প্রকাশ করে সেটিও তিনি বুঝতে পারতেন না। ফলে, তিনি প্রতিদিন গ্রন্থগারে বসে ওরাকল নিয়ে পড়াশোনা করতে থাকেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি ইন্টারনেট কোম্পানিতে চাকরি পান। তবে, আবার ওরাকল নিয়ে গবেষণা করতে চান। কারণ, এ মেজর তাঁর প্রিয় এবং তিনি মনে করেন, ওরাকল চীনা সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার বিরাট সাংস্কৃতিক মূল্য রয়েছে। ভ্লগার হওয়ার পর তিনি দর্শকদের ভালো করে ওরাকল বোঝাতে ভিডিও-ক্লিপ তৈরি করেন। তাঁর দৃষ্টিতে ওরাকল অক্ষর বিশ্লেষণ করা যেন মামলা সমাধানের মতো।
ভিডিওতে তিনি দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন। যেমন ওরাকল অক্ষর শিখে কি চাকরি পাওয়া যাবে? বেকার থাকার আশঙ্কা আছে কী? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর তাকে দিতে হয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, যদিও ওরাকলসংশ্লিষ্ট চাকরির সুযোগ একটু কম, তবে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা ও সরকারি বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় ওরাকল মেজরের স্নাতকদের প্রয়োজন। তবে, জনপ্রিয় মেজরের সাথে তুলনা করলে, তাঁর চাকরি থেকে আয় তুলনামূলকভাবে কম। তবে, এ কাজ তিনি শুধু টাকার জন্য করেন না, বরং আবেগ থেকে করেন।
চীনা যুবক-যুবতীরা আজকাল নিজ নিজ প্রিয় কাজ ও শখের ভিত্তিতে চাকরি খুঁজতে পছন্দ করেন। এটা এখন নতুন প্রবণতা। কিছু কিছু অপরিচিত মেজরও এ কারণে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেইজিং নোর্মল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও পর্যালোচনা কেন্দ্রের প্রকাশিত এক জরিপ অনুসারে, যারা ২০০০ সালের পর জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের দৃষ্টিতে ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিষয় সবচেয়ে আকর্ষণীয়।