পিতামাতার সাথে সন্তানের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপায় প্রসঙ্গে
নিজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে লেখিকা বলেন, তাঁর ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশোনার সময় তিনি ছেলের স্নাতক হওয়ার পর চাকরি ও ভবিষ্যতের লেখাপড়া নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন ছিলেন। তখন স্বামী তাকে বলেন, এখন মাত্র প্রথম বর্ষে আছে ছেলে; এ নিয়ে পরে চিন্তা করো। একদিন ছেলে তাঁদের বলে, ‘আমি স্নাতক হওয়ার পর মাস্টার্সে ভর্তির জন্য আবেদন করবো।’ ছেলের কথা শুনে মা শান্ত হয়ে যান। কারণ, সেটি ছেলের নিজের সিদ্ধান্ত, পিতামাতার পরামর্শ শোনার চেয়ে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও খুশির ব্যাপার।
যখন পিতামাতা কোনো ভুল করেন, তখন সময়মতো দুঃখ প্রকাশ করা জরুরি। এ থেকে হয়তো বাচ্চারা শিখবে যে, ভুল করলে দুঃখ প্রকাশ করতে হয়। বাচ্চারা সাধারণত ভুল করে দুঃখ প্রকাশ করে না। এটা স্বাভাবিক। তারা ভুল করতে করতেই শিখবে। পিতামাতার উচিত নয় তাদের মুখ থেকে ‘সরি’ শব্দটি শোনার জন্য অপেক্ষা করা। কিন্তু নিজেরা যদি মাঝেমাঝে ‘সরি’ বলেন, তবে হয়তো সন্তানও ‘সরি’ বলা শিখবে।
নিখুঁত পিতামাতা বলে কিছু নেই; পিতামাতার দুর্বলতাকে মেনে নিতে হবে। অনেক সন্তান ছোটবেলায় মনে করে বড় হয়ে বাবা বা মায়ের মতো হবে। কিন্তু বড় হয়ে হয়তো সে বুঝতে পারে যে, পিতামাতা নিখুঁত ছিলেন না; তাকে আরও ভালো হতে হবে। এটা চমত্কার একটি ব্যাপার। সন্তানের এই বোধ পিতামাতার জন্য আনন্দদায়ক। তবে, সন্তানের উচিত পিতামাতার দুর্বলতাকে মেনে নেওয়া এবং তাদের প্রতি নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা।
আমরা নিজেদের পিতামাতাকে বেছে নিতে পারি না। কোনো মানুষই তা পারে না। তবে, আমরা নিজেদের চরিত্র গঠন করে সুখী পরিবার গঠন করতে পারি বা অন্তত তার জন্য চেষ্টা করতে পারি। আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য সুখী পরিবার গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে পারি এবং পিতামাতার প্রতি দায়িত্বও পালন করতে পারি। সুস্থ পরিবেশের একটি পরিবার শিশু ও বৃদ্ধ—সবার জন্যই কল্যাণকর।
