পিতামাতার সাথে সন্তানের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপায় প্রসঙ্গে
যদি, কোনো কারণে পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক স্রেফ দায়িত্বের হয়, সেখানে ভালোবাসার উপস্থিতি কম থাকে, তবে সহাবস্থান আনন্দদায়ক হয় না। লেখিকার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছে। এখন তার বয়স ১৮ বছর। ছুটির দিনে ছেলে বাবাকে ফোন করতে পছন্দ করে। তবে, মা-র সাথে তার ফোনে কথা হয় কম। কারণ, ফোন করলেই মা জানতে চান: ‘তুমি মা-র চরিত্রের কোন দিকটা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করো?’ এ ধরনের প্রশ্নে ছেলে বিব্রত হয়। কখনও কখনও মন ভালো থাকলে বলে, মা-র সবকিছুই তার পছন্দ।
এ বিষয়টি নিয়ে লেখিকা সবসময় চিন্তা করেন। সন্তান বড় হয়ে মন থেকে বাবা-মাকে পছন্দ করবে বা তাদের সাথে থাকতে চাইবে—এমনটা প্রত্যেক বাবা-মা চান। এটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লেখিকার বাবা-মা কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনি ছেলেকে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেননি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি কেবল বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়ার জন্য চীনে থাকি না, বরং তাদের সাথে আমি সবসময় থাকতে চাই বলেই থাকি। আমি মা-কে অনেক ভালোবাসি। আমি তাঁর সাথে সময় পেলে আড্ডা দিতে পছন্দ করি।’
লেখিকার মাতা বেশ প্রাণচঞ্চল ও আশাবাদী মানুষ। তবে কোভিড সনাক্ত হওয়ার পর তিনি অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েন। তখন লেখিকা নিয়মিত মা-র সাথে উইচ্যাটে কথা বলতেন এবং তাঁর যত দ্রুত সম্ভব তাকে সুস্থ হয়ে উঠতে উত্সাহ দিতেন।
তাঁর দৃষ্টিতে, পিতামাতার দায়িত্ব নেওয়া সন্তানের কাজ। তবে, সর্বপ্রথমে আলাদা মানুষ হিসেবে জীবন কাটানোর জন্য সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। স্বাধীন ও স্বতন্ত্র চরিত্র গঠন সন্তানের জন্য ভালো।
পিতামাতাদের একটি সাধারণ সমস্যা হলো সন্তানকে বকাঝকা করা, সবসময় সন্তানকে নিয়ে তাদের উদ্বেগ ও চিন্তা সমালোচনা ও বকাঝকার মাধ্যমে প্রকাশ করা। এ সমালোচনা কোনো সন্তান শুনতে চায় না, যদিও তা করা হচ্ছে তাদের কল্যাণের জন্যই। তখন বকাঝকা উল্টো ফল বয়ে আনে। তাই সন্তানের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে বকাঝকার বদলে, তাদের জন্য বেশি বেশি সুস্বাদু খাবার রান্না করা বেশি কার্যকর। তার মানে এই নয় যে, বকাঝকা করা যাবে না। সেটার জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে এবং বন্ধুর মতো সন্তানের সাথে আচরণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সন্তান বকাঝকার মর্ম বুঝতে পারবে বলে আশা করা যায়।