পিতামাতার সাথে সন্তানের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপায় প্রসঙ্গে
চীনের প্রাচীনকাল থেকে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে: ‘সন্তানের জন্য পিতামাতার ভালোবাসা গরুর চুলের চেয়ে বেশি এবং পিতামাতার জন্য সন্তানের ভালোবাসা গরুর চুলের মতো ছোট।’ আসলে, সন্তানের জন্য পিতামাতার ভালোবাসা কখনও কমে না। তবে, সন্তানের কাছে পিতামাতা অনেককিছু আশা করেন। তাঁরা চান, সন্তান স্মার্ট হবে, পড়াশোনায় ভালো করবে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে, ইত্যাদি। অন্যদিকে, যদিও পিতামাতার জন্য সন্তানের ভালোবাসা ততটা গভীর নয়, তবে যেটুকু ভালোবাসা আছে, সেটুকু বিশুদ্ধ বলা যায়।
কোনো সন্তানই তাঁর মা-কে বলে না: ‘মা, তুমি আরও সুন্দর হলে আমি তোমাকে আরও বেশি ভালোবাসতাম’, বা ‘আমি আরও ধনী পরিবারে জন্ম নিলে ভালো হতো’। বস্তুত, প্রত্যেক সন্তানের কাছে তাঁর আপন মা সবচেয়ে সুন্দর নারী এবং পিতা সবচেয়ে ভালো পুরুষ।
শিশুরা সাধারণত বড়দের, বিশেষ করে পিতামাতাকে অপছন্দ করে না। কিন্তু যদি পিতামাতা সবসময় শিশু-সন্তানের সমালোচনা করেন, তখন তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। পিতামাতা অবশ্যই সন্তানের কল্যাণের জন্যই মাঝেমাঝে তার কাজের সমালোচনা করবেন, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সবসময় সন্তানের সমালোচনা করা ঠিক না। ছোট একটি শিশু ভুল করবে এবং ভুল করে করে শিখবে। পিতামাতাকে এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে। শিশুকে তার ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, তার অন্যান্য ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে। সমালোচনা ও প্রশংসা হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ। শিশুদের জন্য সৃষ্টি করতে হবে এমন একটি পরিবেশ, যেখানে তারা নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারবে।
আরেকটি বিষয় মনে রাখা দরকার। সন্তান পিতামাতাকে ভালোবাসলেও, সাধারণত বড় হওয়ার পর তাদের সাথে থাকতে চায় না। কারণ, ভালোবাসার সাথে দায়িত্বও থাকে। পিতামাতা বৃদ্ধ হলে তাদের দেখভালের বিষয়টিও একটি বাস্তবতা। কোনো কোনো সন্তান এই দায়িত্ব পালন করে খুশিমনে; আবার কোনো কোনো সন্তান এ দায়িত্ব পালন করতে চায় না। এই বাস্তবতা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।