চীনে প্রবীণদের জন্য ‘সিনিয়র বিশ্ববিদ্যালয়’ ও প্রসঙ্গকথা
এবারের প্রতিযোগিতায় মোট ১৮ জন হস্তকর্মশিল্পী অংশ নিয়েছেন। তাঁরা একই ডিজাইনের আলমারি তৈরি করেন। এতে মূল কাঠামো, দরজা ও ড্রয়ারসহ বিভিন্ন অংশ রয়েছে। তা ছাড়া, আলমারি মসৃণ করতে হবে, হার্ডওয়্যার স্থাপন করতে হবে। ছেলে লি ত্য সিন অতি চমত্কার ও নির্ভুলভাবে কাজ শেষ করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
এবার প্রতিযোগিতায় নিয়ম ছিল যে, আলমারির বিভিন্ন অংশের ত্রুটি ০.৫ মিলিমিটারের চেয়ে কম হবে। তার মানে বিভিন্ন সরঞ্জাম সংযুক্ত করার পর ত্রুটি ০.৫ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি হবে না। বিষয়টা খুবই কঠিন ছিল।
বিশ্বের দক্ষতা প্রতিযোগিতা অলিম্পিক গেমসের মতো, যা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের প্রতীক। ২০২২ সালের এ প্রতিযোগিতা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর মাসের শেষ দিক পর্যন্ত বিশ্বের ১৫টি দেশে আয়োজিত হয় এবং প্রতিযোগিতার ইভেন্ট ৬২টি। চীনা প্রতিনিধিদল অক্টোবর মাসের শুরুতে থেকে নভেম্বর মাসের শেষ দিক পর্যন্ত জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া আর জাপানে মোট ৩৪টি ইভেন্টে অংশ নিচ্ছে।
লি ত্য সিন বলেন, এমন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা দক্ষ হস্তকর্মশিল্পীদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। এভাবে নিজের দক্ষতাও উন্নত করতে পারেন। আবার বিশ্বের সামনে চীনা হস্তকর্মশিল্পীদের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করতে পারেন। প্রতিযোগিতা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, চীনের আসবাবপত্রের মান অনেক উন্নত।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনের বৈশিষ্ট্যময় কাঠমিস্ত্রি সংস্কৃতি বিশ্বের সভ্যতায় বেশ উজ্জ্বল। প্রতিযোগিতা কাজে লাগিয়ে চীনা হস্তকর্মশিল্পীরা নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে এবং চীনের ঐতিহ্যিক কাঠমিস্ত্রি শিল্পকেও তুলে ধরতে পারে।
২০২১ সালে চীনের চিয়াংসি পরিবেশ প্রকল্প একাডেমির আসবাবপত্র ডিজাইন বিভাগ থেকে স্নাতক হন লি ত্য সিন। স্নাতক হওয়ার পর একাডেমির যুব শিক্ষক হিসেবে চাকরিও পান। তাঁর দৃষ্টিতে চীনের ঐতিহ্যিক কাঠমিস্ত্রি শিল্প চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি চান এই ঐতিহ্যিক হস্তকর্মশিল্পকে সাধারণ মানুষের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত করতে। তিনি আরও বেশি চীনা যুবককে এই শিল্পের দিকে আকৃষ্ট করতে চান।
চীন সরকার কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। তাই বর্তমান যুগ কারিগরি ও প্রযুক্তিগত কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য বেশ ভালো। ধারাবাহিক সুবিধাজনক ব্যবস্থার মাধ্যমে চীনা হস্তকর্মশিল্পের চেতনাও সম্প্রসারিত হয়েছে ও হচ্ছে।
লি ত্য সিনের শিক্ষক লিউ বলেন, চীন বিশ্বের বৃহত্তম আসবাবপত্র তৈরির দেশ ও রফতানিকারক দেশও। চীনের আসবাবপত্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের বাড়িতে শোভা পায়। তাই চীনা আসবাবপত্রের শিল্পায়নে আরো চমত্কার উত্পাদন প্রযুক্তি প্রয়োজন। বর্তমানে চীনা আসবাবপত্র বিশ্বমানে পৌঁছেছে।