নান্দনিক শিক্ষার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে চীন
ঐতিহ্যিক সীমাবদ্ধতার কারণে, প্রাচীনকালে নান্দনিক শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল ছিল। তবে শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের সাথে সাথে এমন সীমাবদ্ধতা এখন আর নাই বললেই চলে। বর্তমানে সবার একটি স্পষ্ট ধারণা হয়ে গেছে যে, নান্দনিক শিক্ষা কেবল নৈতিকতার চর্চা নয়, বরং এ শিক্ষা ব্যক্তির বৌদ্ধিক, শারীরিক, ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়; মানুষদের কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বাড়াতে ভুমিকা রাখে। তা ছাড়া, যদি নান্দনিক শিক্ষাকে স্রেফ নৈতিকতার একটি অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, তবে তা ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তাভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। আসলে, নান্দনিক শিক্ষাকে উপলব্ধিমূলক জ্ঞান বলা যায়। চীনের বিভিন্ন পর্যায়ের স্কুলে নান্দনিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, বৌদ্ধিক ক্ষমতা, ক্রীড়া ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানো। এতে শিক্ষার্থীরা জীবনের প্রতি, জীবনের দায়িত্ব পালনের প্রতি অধিক আগ্রহী হয়ে ওঠে।
১৯১৭ সালের এপ্রিল মাসে চীনা শিক্ষাবিদ ছাই ইউয়ান পেই তাঁর এক লেখায় লিখেছেন, বিশুদ্ধ নান্দনিক শিক্ষা মানুষের অনুভূতি উন্নত করতে পারে, তাদের মধ্যে পবিত্র ও বিশুদ্ধ অভ্যাস তৈরি করতে পারে, এবং স্বার্থপর চিন্তাভাবনাকে নির্মূল করতে পারে।
নান্দনিক শিক্ষা গ্রহণের পর চীনা শিক্ষার্থীদের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। যেমন, তারা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ, কল্পনা ও সৃজনশীলতার চর্চা করতে পারে, তাদের জীবন আগের তুলনায় আরও মজার হয়, তাদের লেখাপড়ার কার্যকারিতাও বাড়ে। নান্দনিক শিক্ষা বুদ্ধি বাড়ায়, শিক্ষার্থীরা আরও গভীরভাবে বিশ্বকে বুঝতে পারে।
বর্তমানে চীনের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলে সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, নাটক, চলচ্চিত্র ও নৃত্যসহ বিভিন্ন মেজর আছে। বিভিন্ন নান্দনিক ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও প্রাধান্য উন্নত করা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের মেধা ও উপযোগী শৈল্পিক বিশেষত্ব খুঁজে পাওয়াও এতে সম্ভব।