নান্দনিক শিক্ষার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে চীন
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে উচ্চশিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতের মৌলিক শিক্ষা আর বাধ্যতামূলক শিক্ষার ওপর অনেক গুরুত্ব দেয় বিভিন্ন পর্যায়ের সরকার। শুধু কেবল সাধারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের শিক্ষা নয়, বরং নান্দনিক শিক্ষা খাতেও ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে আজকের চীন। আজকের অনুষ্ঠানে চীনের নান্দনিক শিক্ষার উন্নয়ন সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
নান্দনিক শিক্ষা আসলে নান্দনিক ক্ষমতা চর্চার মাধ্যমে মানুষের সৌন্দর্য অনুভব, বোঝা, ও এ ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা দেখানোর উপায়। সংকীর্ণ অর্থে বললে, নান্দনিক শিক্ষা শিল্পকলার সাথে জড়িত। আবার বিস্তৃত দৃষ্টিকোণ থেকে লেখলে নান্দনিক শিক্ষা জীবনের সবক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত।
পাশ্চাত্য দেশগুলোর নান্দনিক শিক্ষার ধারণা অষ্টাদশ শতাব্দীর পঞ্চম দশকে গড়ে ওঠে। তবে, প্রাচীনকালের নান্দনিক শিক্ষার চেতনার কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। যেমন, সিচৌ আমলে তথা খৃষ্ঠপূর্ব ১০৪৬ থেকে ৭৭১ সালের মধ্যে, নৈতিকতার শৃঙ্খলা, কবিতা, গান ও নৃত্যসহ বিভিন্ন নান্দনিক শিক্ষার প্রচলন ছিল। ছুনছিউ আমলের শেষ দিকে, চীনের আধ্যাত্বিক গুরু কনফুসিয়াস শিক্ষাকে রাষ্ট্র ও রাজনীতি থেকে আলাদা করেছিলেন। তখন থেকে শিষ্টাচার, সংগীত, শাস্ত্র, গণিতসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাদাভাবে শেখানোর ধারার প্রচলন ঘটে। এর মানে প্রাচীনকাল থেকেই চীনা সমাজে নান্দনিক শিক্ষার আলাদা অস্তিত্ব ছিল।
আধুনিক চীনে তথা ১৯০০ সালের পর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, চীনের সুবিখ্যাত শিক্ষাবিদ ছাই ইউয়ান পেই, ‘শিক্ষা অভিধান’-এ নান্দনিক শিক্ষাকে সংজ্ঞায়িত করেন। এ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, যারা নান্দনিক শিক্ষা দেবেন, তাদের উচিত শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্মের প্রতি আবেগ ও আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করা। আসলে, সাধারণ পড়াশোনার সাথে নান্দনিক শিক্ষার মূল অর্থে কোনো পার্থক্য নেই। দুটোই শিক্ষা। তবে, নান্দনিক শিক্ষায় জীবনের সৌন্দর্য উপলব্ধির ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।