চীনা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ‘কাওখাও’
বন্ধুরা, গত ৭ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সারা চীনের উচ্চবিদ্যালয় পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ‘কাওখাও’-এ অংশগ্রহণ করে। কাওখাও চীনা ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ বটে। কারণ ৬ বছর বয়স থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত—টানা ১২ বছর পড়াশোনার ফল এ পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হয়। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ঠিক হয় কোন শিক্ষার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। তাদের ভবিষ্যতের জীবন ও কর্মসংস্থানও অনেকাংশে নির্ভর করে এই পরীক্ষার ফলের ওপর। আজকের আসরে আমরা চীনের কাওখাও সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
আসলে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি-পরীক্ষার নিয়ম ছিল। ১৯৫২ সালে প্রথম ‘কাওখাও’ পরীক্ষার সময় প্রতিবছরের ১৫ থেকে ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। তখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৯ হাজার। তখন একে বলা হতো অভিজাত শ্রেণীর লোকদের পরীক্ষা। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত কাওখাও পরীক্ষা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের অনুমোদনে কাওখাও পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কার করা হয়। এর পর থেকে কোটি কোটি চীনা শিক্ষার্থীর ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে কাওখাও। কাওখাও পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও ধীরে ধীরে বেড়েছে এবং ২০২২ সালে এ সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও প্রায় এক কোটি। এক্ষেত্রে দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ রয়েছে।
১৯৫২ সালের কাওখাও পরীক্ষা ১৫ থেকে ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতো। সেই সময় প্রতি পরীক্ষার সময় ১০০ মিনিট ছিল। চীনা ভাষা, গণিত, রসায়ন, ইতিহাস ও ভূগোল, পদার্থবিদ্যা, ইংরেজি বা রুশ ভাষাসহ কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হতো। প্রতি শিক্ষার্থীকে ৮টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। চীনের কাওখাও পরীক্ষাব্যবস্থা জাতীয় শিক্ষামানের উন্নতি, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ন্যায্যতা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক ভুমিকা পালন করেছে।