চীনের সংখ্যালঘু জাতির আঞ্চলিক ভাষা রক্ষা কার্যক্রম প্রসঙ্গ
শিক্ষাবিদ সুন হং খাই গত শতাব্দীর পঞ্চম দশকে চীনের হান ভাষার আঞ্চলিক ভাষা ও সংখ্যালঘু জাতির ভাষার ওপর জরিপ ও ফিল্ড জরিপের কাজের মাধ্যমে একজন ভাষাবিদে পরিণত হন। তিব্বতের গেমান ভাষার অধ্যাপক সুনসহ কয়েক প্রজন্মের ভাষাবিদের প্রচেষ্টায় এ ভাষা রক্ষা পেয়েছে। ১৯৭৬ সালে ছাইয়ু জেলায় প্রায় ২০০ লোক গেমান ভাষা বলতে পারতেন। ২০০১ সালে অধ্যাপক লি’র জরিপে দেখা যায় এ সংখ্যা ১৩০ জনে নেমে এসেছে। আর ২০১৫ সালে গেমান ভাষা বোঝার লোক মাত্র ১৩ জন বাকি ছিল। তাই বলা যায়, গেমান ভাষা অতি বিপন্ন একটি ভাষা। তবে কয়েক প্রজন্মের শিক্ষাবিদের প্রচেষ্টায় এ ভাষার টোন, শব্দ, ব্যাকরণসহ বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত হয়েছে এবং এসব ফিল্ড জরিপের ওডিও ও ভিডিও থাকায় এ ভাষা আর বিলীন হবার ভয় নেই। এখন গেমান ভাষা সম্পর্কে ১২ লক্ষেরও বেশি অক্ষরের তথ্য আছে। এর মধ্যে শব্দের সংখ্যা ৫০০০টিরও বেশি, বাক্য ১০০০টিরও বেশি। প্রয়োজন হলে এআই প্রযুক্তিতে এ ভাষা আবার জীবিত করা সম্ভব।
ভাষা সংরক্ষণ প্রকল্প চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত অধ্যাপক লি তা চিন এবং তাঁর গবেষকদল তিব্বতের শাননান, লিনজু আর ছাংতু এলাকার সংখ্যালঘু জাতির ওপর ফিল্ড জরিপ চালান। ফিল্ড জরিপে নতুন কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষাও খুঁজে পান তারা। যেমন ২০১৫ সালে সুখু ভাষা, ২০২১ সালে সংলিন ভাষা ও যা ভাষা খুঁজে পান তারা।
অধ্যাপক লি বলেন, বিপন্ন ভাষার সংরক্ষণে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। তাই প্রত্যেক ভাষা সংরক্ষণকর্মীর দায়িত্ব অনেক ভারী ও গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা মানবজাতির সভ্যতায় গলার মালায় মুক্তার মতো, যা হারিয়ে গেলে মালাও ভেঙ্গে যাবে এবং সভ্যতাও অসম্পূর্ণ হয়ে যাবে।