চীনের সংখ্যালঘু জাতির আঞ্চলিক ভাষা রক্ষা কার্যক্রম প্রসঙ্গ
এ সম্পর্কে গবেষক ওয়াং লি নিং বলেন, বিপন্ন ভাষার সংরক্ষণ মানে ইতিহাসকে শব্দের মাধ্যমে ধরে রাখা। এই সংরক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পুরাতন শাস্ত্রের কথা ও অক্ষর জীবিত রাখা হয়; পূর্বপুরুষদের সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনা এবং বিভিন্ন শাস্ত্রের কথা সংরক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের লোকদের পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়।
ভাষা সংরক্ষণকর্মীরা চীনের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ফিল্ড জরিপ করেন, অডিও বা ভিডিও করে বিভিন্ন ভাষার তথ্য রেকর্ড করেন, এবং মৌখিক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারসহ বিভিন্ন তথ্য চীনা ভাষার ভাণ্ডারে মজুত করেন। এভাবে বিভিন্ন অলিখিত আঞ্চলিক ভাষা ও সংখ্যালঘু জাতির ভাষাকে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
চীনের যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লি তা ছিন নিজের গবেষকদল নিয়ে টানা ৭ বার তিব্বতের ছাংতু, লিনজি, আর শাননান এলাকায় ফিল্ড জরিপ করেছেন এবং এখন পর্যন্ত ২০টিরও বেশি আঞ্চলিক ভাষা উদ্ধার করেছেন।
ভাষা সংরক্ষণের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো তিব্বতে যান তিনি। তখন প্রথম কাজ ছিল চীনের তিব্বতের ছাইয়ু জেলায় ছেংরেন ভাষা সম্পর্কে ফিল্ড জরিপ করা। ২০ বছর আগে এ ফিল্ড জরিপ অনেক চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার ছিল। কারণ, তখন পাহাড় ও পর্বত অতিক্রম করে ছাইয়ু জেলায় পৌঁছাতে টানা তিন দিন লাগতো। রাস্তায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন তারা। জরিপ শুরুর ৩ মাসের মধ্যে তাদের দল পণ্যসংকটে পড়ে। ফিরে আসার পথে তারা ভূমিধসে প্রায় প্রাণ হারাতে বসেছিলেন। নিজেদের প্রাণ বাঁচলেও একটি গাড়ি ভূমিধসে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।
এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিও অধ্যাপক লি তা ছিনকে সংখ্যালঘু জাতির ভাষা সংরক্ষণের কাজ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। প্রথমবারের ফিল্ড জরিপ থেকে বিভিন্ন জাতির বিপন্ন ভাষা সম্পর্কে তারা তথ্য সংগ্রহ করেন। অধ্যাপক লি বলেন, চীনের ভাষা-গবেষণায় বিভিন্ন ধরনের ফিল্ড জরিপ অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির ভাষা এ গবেষণার বিষয়বস্তু। এসব ভাষার তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।