চীনের সংখ্যালঘু জাতির আঞ্চলিক ভাষা রক্ষা কার্যক্রম প্রসঙ্গ
চীন একটি জনবহুল দেশ, লোকসংখ্যা ১৪০ কোটিরও বেশি। চীনে ৫৬টি স্বীকৃত জাতি রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতি। কোনো কোনো সংখ্যালঘু জাতির নিজস্ব ভাষাও আছে। এসব আঞ্চলিক ভাষা চীনের বৈচিত্র্যময় সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষায় অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আগেই অনেক সংখ্যালঘু জাতির ভাষা বা রীতিনীতি বিলীন হয়ে গেছে। যেসব আঞ্চলিক ভাষা এখনও টিকে আছে, সেগুলোকে রক্ষায় চীনে বর্তমানে চলছে বিভিন্ন কার্যক্রম।
বিপন্ন প্রাণী বা উদ্ভিদ রক্ষার বিষয়টি অনেকেই সহজেই বুঝতে পারেন, কিন্তু বিপন্ন ভাষা রক্ষার বিষয়টি অনেকের কাছেই হয়তো নতুন বিষয়। চীনে অনেক আঞ্চলিক ভাষা হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গ্যমান ভাষা এখনও ব্যবহার করেন মাত্র ১৩ জন, দুওস্যু ভাষা বোঝেন মাত্র ৬ জন, সংলিন ভাষার গীতিনাট্য সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে গেছে এবং ছাংলুওমেনবা ভাষার অনেক গীতিনাট্য, গল্প ও রূপকথা বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
ইউনেস্কোর জরিপ থেকে জানা গেছে, সারা বিশ্বে বিভিন্ন ভাষা আছে ৬৭০০টিরও বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভাষা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চীনের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, দেশে যেসব ভাষা এখনও প্রচলিত আছে, সেগুলোর মধ্যে ৬৮টি ভাষার প্রতিটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটি বা তারচেয়ে কম, ৪৮টি ভাষার প্রতিটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০০০ জনের কম, ২৫টি ভাষার প্রতিটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা হাজার জনের চেয়ে কম। আরও কিছু ভাষা আছে যেগুলো ব্যবহারকারীর সংখ্যা কয়েক ডজনে এসে দাঁড়িয়েছে। সোজাভাবে বললে, চীনের অনেক আঞ্চলিক ভাষা বিলুপ্তির হুমকির মুখে।
গত শতাব্দীর ৯০-এর দশকে চীনা পণ্ডিতরা হিমালয় শৃঙ্গ, ছাংবাই পর্বতের কাছে হেইলংচিয়াং নদী এবং হাইনান প্রদেশের বনাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাষা উদ্ধারকাজ শুরু করেন।এ সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় ভাষাকমিটির পরামর্শক, চীনের ভাষাসম্পদ সংরক্ষণ প্রকল্পের শীর্ষ বিজ্ঞানী ছাওজিইয়ুন বলেন, আমরা সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এগুচ্ছি।