চীনের সংখ্যালঘু জাতির আঞ্চলিক ভাষা রক্ষা কার্যক্রম প্রসঙ্গ
চীনের শেনচেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উ ফাং জরিপ থেকে জানতে পেরেছেন যে, শেনচেনে একটি হান জাতির ভাষার শাখা চানমি ভাষা রয়েছে। এ ভাষা প্রধানত শেনচেন শহরের হুইচৌসহ কয়েকটি জেলা ও গ্রামে ব্যবহার করা হয় এবং এ ভাষা জানা লোকের সংখ্যা মাত্র কয়েক লাখ।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক উ বলেন, চানমি ভাষা চীনের মিং রাজবংশ আমলের ইতিহাসের স্বাক্ষী। স্থানীয় গ্রাম থেকে সংগৃহীত পরিবারের বংশতালিকা গবেষণা করার পর জানা গেছে যে, চানমি ভাষা ফুচিয়ান প্রদেশ থেকে কুয়াংতুং-এ প্রবেশ করেছে।কুয়াংতুং এবং ফুচিয়ানে বিভিন্ন ধরনের আঞ্চলিক ভাষা রয়েছে। স্থানীয় জেলার ইতিহাস থেকে জানা গেছে যে, মিং রাজবংশ আমলের শেষ দিকে একজন সেনাপতি যুদ্ধে ব্যর্থ হওয়ার পর তার সৈন্যদের নিয়ে ফুচিয়ান থেকে কুয়াংতুংতে চলে আসেন। সেখানে বসবাস করার পর স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষার প্রভাবে নতুন একটি ভাষা সৃষ্টি হয়, আর সেটিই হল চানমি ভাষা।
চানমি ভাষা সম্পর্কে অধ্যাপক উ বলেন, এ আঞ্চলিক ভাষার কিছু অক্ষরের সঙ্গে প্রাচীন যুদ্ধরত রাজ্যের সময়কালের সম্পর্ক থাকতে পারে। অর্থাত্ খৃষ্ঠপূর্ব ৪০০ সাল পর্যন্ত এ ভাষার প্রায় ২৫০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। এমন আঞ্চলিক ভাষা যেন জীবিত জীবাশ্মের মতো।
২০১৫ সালের ১৪ই মে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভাষা কমিটির যৌথ উদ্যোগে ‘চীনা ভাষাসম্পদ সংরক্ষণ প্রকল্প বিজ্ঞপ্তি’ প্রকাশিত হয়। সারা চীনে ভাষাসম্পদ জরিপ, রক্ষা, প্রদর্শন ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাতে চীনের সংখ্যালঘু জাতির ১০০ ধরনের বিপন্ন ভাষা ও হান জাতির ১০০ ধরনের বিপন্ন আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে জরিপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমন প্রকল্প চালু করার মাধ্যমে বিপন্ন ভাষার ‘কথার নমুনা’ লিপিবদ্ধ করা, কেবল অক্ষর নয় বরং শব্দের উচ্চারণও সংগৃহীত হয়। দর্শকরা কেবল মোবাইল ফোন দিয়ে কিউআর কোর্ড স্কান করে বিভিন্ন বিপন্ন ভাষার গীতিনাট্য বা কথা শুনতে পারেন। প্রাচীনকালের শব্দ শোনা মানে যেন সেই সময়ে ফিরে যাওয়া।