চীনের ‘মাওতুন’ সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী ছেন ইয়ানের গল্প
কেই কেউ বলেন, বই পড়া একটি জাতি ও দেশের চেতনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে লেখক ছেন বলেন, ‘আমার বড় হওয়ার অভিজ্ঞতায় বই পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। বই পড়ার মাধ্যমে অন্যদের জীবন ও ইতিহাস থেকে অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা যায়। এভাবে আমাদের জীবন আরও সুন্দর হতে পারে। আমার পড়া দুই রকমের: একটি বাস্তব জীবন থেকে সংগৃহীত অভিজ্ঞতা এবং আরেকটি বই পড়া থেকে অর্জিত তথ্য ও জ্ঞান।’
মানুষের মূল্যবোধ গঠনে বইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে আগের প্রজন্মের মানুষকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে আগে। নতুন প্রজন্ম আগের প্রজন্মের কাছ থেকে দেখে ও শুনে শেখে। বই পড়ার অভ্যাস একটি দেশের চেতনা ও স্বভাবের প্রতিফলন ঘটায়।
বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে, জ্ঞানের নতুন নতুন মাধ্যমের সঙ্গে আমরা পরিচিত হচ্ছি। অনলাইনে ছোট ভিডিওসহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ার অসংখ্য কনটেন্ট আমাদের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। বই পড়া বা সাহিত্য রচনার ওপর এর কী প্রভাব? এ সম্পর্কে ছেন বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমিও ছোট ভিডিও দেখি। তা আমার কাছে স্ন্যাকসের মতো। আজকাল জীবনের গতি বেড়েছে; বিভিন্ন ধরনের মনের খোরাকের চাহিদাও তাই বেশি। তবে, কেবল এভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হলে মানুষের চিন্তার জগত সীমিত হয়ে থাকবে। কেবল বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার মাধ্যমে সঠিক চেতনা ও বিবেচনাবোধ সৃষ্টি করা সম্ভব।’
উপন্যাস লেখার অভ্যাস সম্পর্কে ছেন ইয়ান বলেন, যুবকাল থেকেই তাঁর সাহিত্যচর্চার কাজ শুরু হয়। গত ৪০ বছর ধরে তা অবিরাম চলেছে। তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীদের মধ্যে অনেকে অন্যান্য পেশায় গেছেন। তবে, তিনি কেবল সৃজনশীল লেখার ওপর মনোযোগ দেন। অফিসের কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে যেতেন তিনি এবং বই পড়া ও উপন্যাস লেখার কাজ করতেন, এখনও করেন। সাপ্তাহিক ছুটিতেও খুবই কম সময়ই তিনি বাইরে যান। যখন একটি উপন্যাস রচনা করা শুরু করেন, তখন দিনের বেলাও জানালা ও দরজা বন্ধ করে রাখেন। এভাবে আরও মনোযোগ দিয়ে কাজ করা যায় বলে তিনি মনে করেন। এ সম্পর্কে ছেন বলেন, ‘লেখার সময় আমি সম্পূর্ণভাবে নিজের দুনিয়া ও সাহিত্যের বিশ্বে প্রবেশ করি। লেখার সাফল্য সম্পর্কে কোনো টিপস শেয়ার করতে হলে বলব, মনোনিবেশ। মানুষের জীবনে সময় বেশি নয়। একটি কাজ ভালো করতে চাইলে মনোযোগ দিয়ে করতে হবে।’