রকেট চেজার
সন্ধ্যায় আকাশে তারা জ্বলতে শুরু করেছে। হঠাৎ করে অন্ধকারে আগুনের ঝলকানি ওঠে আকাশে। গর্জন যেন বধির করে দেয়। সৈকতে জড় হওয়া মানুষগুলো আকাশে আগুনের ঝলকানির দিকে তাকায়। একটু পরে সে অগ্নিপিণ্ড একটি তারার মতো মহাকাশে অদৃশ্য হয়ে যায়।
এটি রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্য। আর মানুষের জন্য সবচেয়ে রোমান্টিক দৃশ্যও বটে। ২০১৬ সালে চীনে চালু হয় প্রথম উন্মুক্ত-সৈকত উৎক্ষেপণকেন্দ্র ওয়েন ছাং উৎক্ষেপণকেন্দ্র এবং রকেটের উৎক্ষেপণ পাহাড়, যেটি মরুভূমির ভেতর থেকে সুন্দর সৈকতে এসেছে। এছাড়া মুন বে, পাথর পার্ক ও ব্রোঞ্জ ড্রাম পর্বতের সঙ্গে মিলে সুন্দর দৃশ্য সৃষ্টি হয়েছে।
এখন চীনে রকেটের চেজার আর কোনও নতুন বিষয় নয়। মহাকাশ বিষয়ক পর্যটন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ওয়েন ছাং একসময় প্রবাসী চীনাদের নগর ছিল আর আজ সেটা স্বপ্নের শহরে পরিণত হয়েছে।
২০২৩ সালের ১০ মে বিকেলে ৬টার দিকে, থিয়ান চৌ-৬ মহাকাশযানের উৎক্ষেপণের ৪ ঘন্টা আগে, হাই নান প্রদেশের ওয়েন ছাংয়ের ছিসুই সৈকতে দর্শনার্থীদের ভীষণ ভিড় হয়। সাদা সৈকতে নানা রঙের তাবু দেখা যায়। মানুষের মুখে চীনের জাতীয় পতাকা আঁকা এবং পোশাকে শ্লোগান লেখা ‘চীনা মহাকাশযান এগিয়ে যাও’। ভাল একটি স্থান পাওয়ার জন্য এমনকি আগের দিন থেকে মানুষ এখানে এসে তাবু গাড়তে শুরু করে।
এমন দৃশ্য প্রায় প্রতিবারের উৎক্ষেপণের সময় দেখা যায়। পর্যটকরা বিমানযোগে হাই নান প্রদেশের রাজধানী হাই খৌতে পৌঁছায়। তারপর বুলেট ট্রেনে করে ওয়েন ছাং শহরে এবং শেষে গাড়িতে করে ২০ কিলোমিটার দূরে উৎক্ষেপণকেন্দ্রে পৌঁছায়। এ কেন্দ্র লং লৌ নামে একটি জেলায় অবস্থিত। এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে উৎক্ষেপণ দেখা যায় যেমন সৈকত, ছাদ, উচ্চ ভবনের ব্যালকনি ইত্যাদি। এমনকি এ জেলার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে চোখ তুলে তাকিয়েও দেখা যায় উড়ে যাচ্ছে রকেট।