আকাশ ছুঁতে চাই ৫
করোনা শিখিয়েছে অনেক কিছু
চীনের সফল ব্যবসায়ী নারী থান তামেই। যিনি একটি চীনা নিটওয়্যার কোম্পানির প্রধান। কাজের প্রয়োজনে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানো এই নারী পরিবারের সাথে সময় কাটানোর পাশাপাশি ঘরে বসেই করেছেন ব্যবসা পরিচালনা। এখন আফরিন মিম বলবেন থান তামেইয়ের দীর্ঘ তিন বছরের ঘরবন্দি সময়ের গল্প।
চিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানচিংয়ের একটি নিটওয়্যার কোম্পানির মালিক থান তামেই। যিনি মহামারীর করোনার সময়টায় ঘরে বসেই পরিচালনা করেছেন নিজের ব্যবসা কার্যক্রম।
মহামারীতে বিশ্বব্যাপীতে দেখা দেওয়া অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তাকেও পড়তে হয়েছিল নানা সমস্যায়। অনেক ক্লায়েন্ট ও অংশীদার বের হয়ে যান তার এ ব্যবসা থেকে।
ব্যবসার এই কঠিন সময়ে কমে গিয়েছিল পণ্য অর্ডার। দেরিতে হতো পণ্য ডেলিভারী । একটা সময় পর কমে আসছিল আয়। কিন্তু এই প্রতিকূল সময়েও কর্মচারীদের বেতন ঠিক সময়ে দিয়েছেন থান তামেই।
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে অভ্যন্তরীণ বাজারে নমুনা এবং উদ্বৃত্ত স্টক বিক্রি করতে হয়েছিল। আমার কর্মচারীরা ও আমি অডিও বই তৈরি করতে শুরু করেছিলাম। এটি ছিল আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাজের বাইরের কাজ। সেই সময়ে আমি উপলব্ধি করেছি এই ব্যবসা আমার নিজের সন্তানের মতো”।
গেল কয়েক বছরে থানের দৈনন্দিন জীবন-যাপনে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এক সময় কাজের প্রয়োজনে ক্লায়েন্টদের সাথে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণে অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কাজের বাইরে বেশিরভাগ সময়ই কাটছে পরিবারের সাথে।
গেল কয়েক বছরে ব্যবসায় যেমন পরিবর্তন হয়েছে তেমনি তার পরিবারেও এসেছে পরিবর্তন। তার ছেলের ঘর আলো করে এসেছে নাতি। এই কয়েক বছরে তার সাথেও আনন্দে সময় কেটেছে তার। তিনি বলেন, "চীনের মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নীতি অনেক মানুষকে রক্ষা করেছে। অন্যথায়, প্রাদুর্ভাবের শুরুতে আরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারত যখন স্ট্রেনগুলো আরও মারাত্মক ছিল।"
করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি অবস্থা তার জীবনে এনে দিয়েছে ব্যাপক ইতিবাচক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ।
এখন ব্যবসা আবার আগের অবস্থায় ফিরে ফিরে আসছে ধীরে ধরে। আর থান তামেই নতুনভাবে উপলব্ধি করছেন পরিবারের সঙ্গে বেঁচে থাকার আনন্দ।
একজন অগ্রদূত ইয়ুয়ে সাই কান
ইয়ুয়ে সাই কান চীনের একজন বিখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তার বই ‘বি এ পাইয়োনিয়ার’ বা ‘একজন অগ্রগামী মানুষ’ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এটি তার দশম বই এবং চীনা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম আত্মজীবনী। এখানে তিনি বলেছেন তার জীবনের সাফল্য ও ব্যর্থতার গল্প। আমার তৈরি একটি প্রতিবেদন শুনবেন ।
ইয়ুয়ে সাই কানের জন্ম ১৯৪৬ সালে কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুইলিন শহরে। শৈশব কেটেছে হংকংয়ে। তিনি হাওয়াইতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কাটান এবং পিয়ানো বাজানো শেখেন। বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থী থাকার সময় এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খ্যাতি পান।
১৯৭২ সালে তিনি নিউইয়র্কে যান এবং সেখানে একটি টিভি সিরিজ নির্মাণ করে দারুণ খ্যাতি পান। তিনি প্রাচ্যের সংস্কৃতি আমেরিকান দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন। তার টিভি সিরিজটি অনেক পুরস্কার পায় এবং তিনি নিজেও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অগ্রদূত হয়ে ওঠেন। প্রাচ্য সৌন্দর্য, ফ্যাশন, সংস্কৃতির আইকন হয়ে ওঠেন ইয়ুয়ে।
১৯৮৬ সালে তিনি চীনে ফিরে আসেন। তিনি সিসিটিভিতে ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড ‘ নামে একটি অনুষ্ঠান নির্মাণ ও উপস্থাপনা করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান।
১৯৯২ সালে জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন। তিনি ইয়ুয়ে সাই প্রসাধনী ব্র্যান্ড বাজারে আনেন।
তিনি ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে সাফল্য পেয়েছেন। দীর্ঘ জীবনে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখেছেন। বিশেষভাবে লিখেছেন লাইফ স্টাইল, রিলেশনশিপ, সাফল্য ব্যর্থতা ইত্যাদি নিয়ে।