মেড ইন চায়না : পর্ব-২১: ছুইওয়ান ও কার্ড খেলা
ছুইওয়ান খেলার নিয়মকানুন কিন্তু এখনকার গলফের মতোই। খেলোয়াড়রা সীমিত সংখ্যক ক্লাব ব্যবহার করতো ছুইওয়ানে। ছুইওয়ানে থাকতো ১০টি ক্লাব ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা আর আধুনিক গলফে আছে ১৪টি। আবার উঁচুনিচু নানা ভূখণ্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে করা হতো গর্ত, এবং সেসব গর্তে পুঁতে দেওয়া হতো রঙিন পতাকা।
ছুইওয়ান খেলার সময় খেলোয়াড়দের সততার ব্যাপারে কঠোর শিষ্টাচার ও নিয়ম মানতে হতো। এমনকি খেলায় কোনো ধরনের অসততার আশ্রয় নিলে ছিল শাস্তির বিধান।
ছুইওয়ানের বল হতো নানা আকারের। আর এগুলো তৈরি হতো কাঠ দিয়ে।
ছুইওয়ান সোং রাজবংশে এতই জনপ্রিয় ছিল যে, সম্রাট হুইচং নিজেও ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ খেলোয়াড়। পরবর্তীতে ইউয়ান ও মিং রাজবংশের সময়ও এটি ছিল জনপ্রিয় খেলা। পরে ছিং রাজবংশের সময় ছুইওয়ানের জনপ্রিয়তা কমে আসে এবং ওই সময় শুধু চীনের নারী ও শিশুরা তাদের অবসর কাটাতে খেলাটি খেলতো।
শুনতে সহজ মনে হলেও ছুইওয়ান খেলায় স্কোরিং পদ্ধতিটা ছিল খানিকটা জটিল। পরপর তিনটি বা এর কম স্ট্রোকে গর্তে বল ফেলতে পারলে পাওয়া যেত ৩ পয়েন্টের টোকেন। প্রথম ১০ বা ২০ পয়েন্ট অর্জনকারীকে ঘোষণা করা হতো বিজয়ী। চার বা বেশি স্ট্রোকের জন্য কোনো পয়েন্ট ছিল না।
ছুইওয়ানের সঙ্গে আধুনিক গলফের দুটি বড় মিল হলো গর্তের মাঝে পতাকা ও গলফ ব্যাগ ব্যবহার করা। আবার একটি অমিলও ছিল। ছুইওয়ান খেলায় প্রথম স্ট্রোকটি গলফের মতো সটান দাঁড়িয়ে করা হলেও দ্বিতীয় স্ট্রোকের সময় নিয়ম ছিল খেলোয়াড়কে মাটিতে হাঁটু গেঁড়ে বসতে হবে।
ছুইওয়ান এখন প্রায় বিলুপ্ত হলেও আদতে গলফের ছদ্মবেশে কিন্তু এটি বেশ বহাল তবিয়তে টিকে আছে। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে নামিদামি খেলার তালিকাতেও আছে এটি।
এবার আমরা শুনবো চীনের আরেকটি আবিষ্কার কার্ড খেলার কথা। ঘরের ভেতর অবসর কাটানোর একটি বড় বিনোদন মাধ্যম হলো নানা ধরনের কার্ড গেইম। আর এই কার্ডের মতো দেখতে যত খেলা আবিষ্কার হয়েছে তারমধ্যে তাস, মাহচোং ও ডোমিনো অন্যতম। কার্ডের এই ইনডোর খেলাগুলো পুরোপুরি মেড ইন চায়না।