মেড ইন চায়না:পর্ব-৭ আকুপাংচার
এই টিসিএম-এর একটি ধারণা হলো আমাদের দেহের অভ্যন্তরে আছে একটি অত্যাবশ্যক শক্তি। যার নাম ছি। শরীরের মোট ১২টি চ্যানেলে এই ছি শক্তি প্রবাহিত হয়। চ্যানেলগুলোর আরেক নাম মেরিডিয়ান। যদি এই ছি ভারসাম্যপূর্ণ হয় তবে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। কিন্তু যখন এই ছি’তে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, তখন দেখা দিতে পারে নানা রোগ। এই ছি এর সঙ্গে আবার ইয়িন এবং ইয়াং নামের দুটি পরষ্পর বিপরীতধর্মী শক্তির সম্পর্ক আছে। এ দুটোও আমাদের শরীরে ভারসাম্য তৈরি করে। টিসিএম-এ মূলত ইয়িন ও ইয়াং-এর মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা হয় এবং ওই শক্তিপ্রবাহের মেরিডিয়ানগুলোর মাধ্যমে শরীরে শক্তির প্রবাহ পুনরুদ্ধার করে। আর এর একটি পদ্ধতি হলো আকুপাংচার। এতে শরীরের বিশেষ বিশেষ প্রেশার পয়েন্টে ঢোকানো হয় জীবাণুমুক্ত বিশেষ ধরনের সূচ। এতে করে উদ্দীপ্ত হয় ওই অঞ্চলের স্নায়ু। আর সেই উদ্দীপনার সংকেতটি পৌঁছে যায় স্নায়ুতন্ত্রের বিশেষ স্থানে। তখনই কমে আসে ব্যথা কিংবা ধীরে ধীরে সেরে যেতে থাকে দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ।
আজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর আগে চীনা ভাষার জনক খ্যাত সম্রাট হুয়াংথিন আবিষ্কার করেন আকুপাংচার। তিনি মূলত প্রথম আকুপাংচারকে একটি চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দেন ও এর নানা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। পরে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হান রাজবংশের আমলেই আকুপাংচারের তত্ত্ব এবং অনুশীলন পৌঁছায় নতুন এক স্তরে। আর সেই আকুপাংচার ২০ শতক পর্যন্ত অপরিবর্তিতই ছিল।
আকুপাংচারবিদরা বিশ্বাস করেন মানবদেহে দুই হাজারেরও বেশি আকুপাংচার পয়েন্ট রয়েছে। এই পয়েন্টগুলো বিভিন্ন ছি চ্যানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত। মেরিডিয়ানগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলোতে আকুপাংচার ব্যবহার করা হলে তা ওই ছি শক্তির ব্লক কাটিয়ে শরীরে শক্তির প্রবাহ উন্নত করে।