চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪২
চু তাও বা বাতা সানরেনের অঙ্কন শৈলীতে মুগ্ধ তরুণ চিত্রশিল্পী লাও ওয়েইওয়েন। তার কাজে অনুপ্রাণিত চু এখন চিয়াংসিতে বসবাস করছেন এবং চর্চা করছেন ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং। তিনি বলেন:
‘ঐতিহ্যবাহী চীনা চিত্রকলায় শুরুতে পশ্চিমা চিত্রকলার মতো স্কেচ করার রীতি ছিল না। তার বদলে একজন শিল্পী সরাসরি ক্যানভাসে তুলি ব্যবহার করেন। যার ফলে ঐতিহ্যবাহী চীনা চিত্রকলায় একটা নমনীয়ভাব থাকে, তবে একই সঙ্গে থাকে শক্তি আর ওজস্বিতা’।
চিয়াংসির সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং এর বৈশিষ্ট্যময় নৈসর্গিক সৌন্দর্যই তাকে এ প্রদেশের সঙ্গে আত্মিক করেছে বলেছে জানান লও।
‘চিয়াংসি পেইন্টিংয়ে এখানকার পাহাড়-নদীর নিসর্গ একাকার হয়ে মিশে আছে। বড় বড় শিল্পীরা এক সময় যে ল্যান্ডস্কেপে ছিলেন, আজ আমি সেখানেই বসবাস করছি। এজন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি’।
নিজের চর্চার পাশাপাশি লও ওয়েইওয়েন এখন তার শিক্ষার্থীদের মাঝে চিয়াংসি পেইন্টিং স্কুলের মূল ধারণার প্রসার ঘটাতে কাজ করছেন যাতে এ শিল্পে নতুন নতুন প্রতিভার আগমন ঘটে।
প্রতিবেদন: মাহমুদ হাশিম।
৩. চিরায়ত চীনা সাহিত্য
হান ইয়ু: চীনা সাহিত্যের মহান গদ্যশিল্পী
চীনের থাং রাজবংশের সময়কার একজন কবি, দার্শনিক, গদ্যকার ও রাজনীতিবিদ ছিলেন হান ইয়ু। তিনি কবিতার চেয়ে গদ্য লেখার জন্য বেশি বিখ্যাত। তাকে থাং ও সং যুগের মহান আটজন গদ্যকারের অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি কনফুসিয়াসের দর্শনের অন্যতম ব্যাখ্যাকার এবং নিও কনফুসিয়ানিজমের একজন প্রভাবশালী লেখক। চীনের সাহিত্যে তার অবদানের জন্য তাকে দান্তে, শেকসপিয়ার ও গ্যেটের সঙ্গে তুলনা করা হয়। মিং যুগের পন্ডিত মাও খুন তাকে চীনের আট মহান গদ্যকারের মধ্যে শ্রেষ্ঠজনের আসন দিয়েছেন।
হান ইয়ুর জন্ম ৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে হ্যইয়াং সিটিতে। বর্তমানে এটি হ্যনান প্রদেশের মংচৌতে অবস্থিত। তিনি অভিজাত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার বাবা সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তবে মাত্র দুই বছর বয়সে বাবাকে হারান হান ইয়ু। তাকে প্রতিপালন করেন জ্যেষ্ঠভ্রাতা হান হুই। ৭৭৪ সালে তার পরিবার রাজধানী ছাংআনে চলে আসে। হান হুইয়ের সঙ্গে মন্ত্রী ইয়ুয়ান চাইয়ের বন্ধুত্ব ছিল। ইয়ুয়ান চাই সম্রাটের বিরাগ ভাজন হলে হান হুইও রাজরোষে পড়েন। পরিবারসহ দক্ষিণ চীনে চলে যান তারা। হান হুই কুয়াংতং প্রদেশের শাসক হন এবং ৭৮১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।