দেহঘড়ি পর্ব-০৪৮
হৃদরোগের জন্য যে ভেষজ ওষুধ টিসিএম চিকিৎসকরা দেন সেগুলো রোগীদের অবস্থাভেদে ভিন্ন হয়। টিসিএম প্রেসক্রিপশনের ধারণা হলো রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী বেশ কিছু ঔষধি ভেষজকে একত্রিত করে একটি ফরমুলা তৈরি করা। টিসিএমের সবচেয়ে স্বীকৃত তত্ত্ব হলো ‘চুন-চ্যন-চুও-শি’ অর্থাৎ সম্রাট-মন্ত্রী-সহায়তাকারী-কুরিয়ার। চুন রোগের প্রধান কারণ বা উপসর্গ দূর করে, চ্যন’ চুনের প্রভাবকে শক্তিশালী করে, ‘চুও’ চুনের সম্ভাব্য বিষাক্ত প্রভাব কমায় বা দূর করে এবং ‘শি’ ভেষজগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্গগুলোতে পৌঁছে দেয়। হার্ট ফেইলিওরের চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি ফরমুলা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো বেশ কয়েকটি পেটেন্ট ওষুধ, যেমন বড়ি, ক্যাপসুল ও ইনজেকশন তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের মতে, হৃদরোগের ঝুঁকি সৃষ্টির কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, ধূমপান, অপর্যাপ্ত বা নিম্নমানের ঘুম এবং অনিয়ন্ত্রিত মানসিক চাপ। টিসিএমের নীতি মেনে প্রতিটি ঝুঁকিই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জেনে নেবো কীভাবে এসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সে সম্পর্কে:
নিষ্ক্রিয়তা দূর করার জন্য থাইচি, ছিকুং ও যোগ ব্যায়াম করা যায়। থাইচি ব্যায়ামের একটি মৃদু ধরন। এটি শারীরিক শক্তি, নমনীয়তা ও ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং একটি সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করে। থাইচিকে সাধারণত ‘গতির মধ্যে ধ্যান’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিক যে, মন ও শরীরের এই অনুশীলন অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা নিরাময় ও প্রতিরোধ করতে পারে। অন্যদিকে ছিংকুং হলো শারীরিক-ভঙ্গিমা, নড়াচড়া, শ্বাস-প্রশ্বাস ও ধ্যানের একটি ব্যবস্থা যা স্বাস্থ্য, আধ্যাত্মিকতা ও মার্শাল-আর্ট প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। আর যোগ ব্যায়াম বা ইয়োগা হলো মনঃসংযোগ করার মাধ্যমে একটি নিদিষ্টি নিয়মে অবস্থান করা এবং পদ্ধতিমাফিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চালনা করা। মনকে সুস্থ্য রাখতে নিয়মিত যোগ ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নাই।